চিকুনগুনিয়া জ্বরের অন্যতম লক্ষণ জয়েন্টে ব্যথা
বর্তমানে চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রকোপ বেশ বেড়েছে। অনেক জ্বর, জয়েন্টে তীব্র ব্যথা চিকুনগুনিয়া জ্বরের লক্ষণ। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮০০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. শামীম আহম্মেদ। তিনি জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও অধ্যাপক।
প্রশ্ন : চিকুনগুনিয়া জ্বর কী? এর লক্ষণগুলো কীভাবে প্রকাশ পাচ্ছে?
উত্তর : এটি একটি ভাইরাল ইনফেকশন বা ভাইরাল ফিবার, যেমন—ডেঙ্গু ছিল। সে রকম একটি পরিস্থিতি এখন আমাদের দেশে। আমরা জানি, এডিস মশার মাধ্যমে এই জ্বর হয়। যেই রোগীটার চিকুনগুনিয়া হয়, তার চার-পাঁচ দিন পর্যন্ত ভাইরাসটা রক্তে থাকে। এই সময় যদি মশাটা আবার কামড় দিয়ে আরেকজনকে কামড়ায়, তখনই এটা ছড়ায়। এটা যাচ্ছে কিন্তু মানুষের থেকে মশার মাধ্যমে। তাহলে মানুষ তো এখন ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হচ্ছে। চিকুনগুনিয়া রোগটি প্রথম ১৯৫৩ সালে তানজানিয়া ও আফ্রিকায় দেখা যায়। এ রোগের একটি বৈশিষ্ট্য হলো ব্যথাই প্রধান। জ্বরের কষ্টের চেয়ে ব্যথার কষ্টটা বেশি। দুই, তিন বা চার দিন জ্বর থাকতে পারে। সঙ্গে বমি থাকতে পারে। ব্যথাটা সমস্যা। এটা জয়েন্টে সংক্রমিত করে। পায়ের জয়েন্ট, ওপরের জয়েন্টগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। পিঠের মেরুদণ্ডের জয়েন্টগুলোতে সংক্রমণ করে। এ জন্য এত ব্যথা হয় যে মানুষ হাঁটতে পারে না। ধনুকের মতো হয়ে যায়। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে এবং উপুড় হলে ব্যথা পায়। এত ব্যথা যে হাঁটতে পারে না। চার-পাঁচ দিন জ্বর থাকে। ব্যথা হয়। অনেকেই ভালো হয়ে যায়, অনেকের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়। দুই মাস, তিন মাস ব্যথাটা দীর্ঘস্থায়ী হয়। ব্যথার ওষুধ খেতে হয়।
যাঁরা বৃদ্ধ, যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে, রেনাল ফেইলিউর রয়েছে তাঁদের ব্যথার ওষুধগুলো দিলে আবার কিডনির সমস্যা হয়, হচ্ছে।
চিকুনগুনিয়া হলে যেহেতু ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। তাই কিডনির রোগ হওয়ার একটি ঝুঁকি রয়ে যায়। চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে কিডনি সরাসরি জড়িত নয়। তবে পরোক্ষভাবে যেটি হয়, প্রচণ্ড ব্যথার জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খেতে হয়। আমরা বলি প্যারাসিটামল খান। প্যারাসিটামল কিন্তু কিডনির সমস্যা করে না। কিন্তু যখন নন-স্টেরয়েডাল ইনফ্লেমেটোরি ড্রাগ আমাদের দিতে হয়, তখন ঝামেলা হতে পারে। সে জন্য আমরা বলি ব্যথার ওষুধ দেন। ছেঁক দেওয়ার ক্ষেত্রে বলি গরম পানির ছেঁক না দিয়ে বরফের ছেঁক দেন। সেটা বোধ হয় ভালো হয়।