মেনোপজ : করণীয়
মেনোপজের ( দীর্ঘমেয়াদে ঋতুস্রাব বন্ধ) সময় হট ফ্লাস হওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয়। এ সময়ে কী করণীয়? এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৯৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. নাঈমা শারমিন হক। বর্তমানে তিনি জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজের অবসটেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আপনারা কী ধরনের পরামর্শ দেন এই ক্ষেত্রে?
উত্তর : প্রথমত আমরা রোগীকে বলি, এটি আপনার হবে। স্বাভাবিক। আপনার বয়স অনুযায়ী ঋতুস্রাব যেমন শুরু হয়েছিল, খুব অল্প বয়সে, তখনো কিন্তু এটা মেনে নিতে একটু সময় লেগেছে, এখন আপনার বয়স হয়ে গেছে, এখন ঋতুস্রাবটা বন্ধ হয়ে যাবে। আর আপনি শরীরে যে পরিবর্তনগুলো লক্ষ করছেন সেগুলো ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই হচ্ছে। একটি সময় জিনিসগুলো আরেকটু বাড়বে, যখন একদমই হরমোন থাকবে না। তবে ভয় পাবেন না। উপসর্গগুলো যেন কম থাকে আপনার, সেই জন্য আমরা আপনাকে বলে দেব, কীভাবে আপনার খাওয়া উচিত, কী অভ্যাসে আপনাকে অভ্যস্ত হতে হবে। চাইলে এসব রোগীর এইচআরটির পরামর্শও দিয়ে থাকতে পারি।
প্রশ্ন : কখন এই পরামর্শ দেন?
উত্তর : উন্নত বিশ্বে এইচআরটি তো খুব প্রচলিত। এইচআরটি হলো হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি। মানে যে হরমোনগুলো না থাকার কারণে শরীরের যে পরিবর্তনগুলো আসছে, আমরা বাইরে থেকে হরমোন সাপ্লিমেন্ট দিয়ে এই উপসর্গগুলো কিছুটা কমিয়ে রাখার চেষ্টা করি। স্বাভাবিকভাবে হয়তো যেরকম থাকার কথা সেরকম করা যায় না। আমরা অতটা উচ্চ ডোজে না দিলেও এইচআরটি মধ্যমমানের দেওয়া যায়।
প্রশ্ন : সবার জন্যই কি এইচআরটি প্রযোজ্য মনে করেন?
উত্তর : রোগী নির্বাচনের বিষয় থাকে। যদি কারো কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি থাকে, হার্টের রোগ থাকে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে, কেউ স্থূল হয়, কিংবা যদি তার প্রেশার থাকে, যেকোনো ঝুঁকি যদি থাকে, সেই ক্ষেত্রে আমরা এইচআরটি পছন্দ করি না। তবে যদি কারো এই সমস্যাগুলো না থাকে তাহলে আধুনিক যুগে বলা হয় এইচআরটি আসলে অধিকারের মতো। এতদিন যে আমরা বলে আসতাম, এইচআরটি নিলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে, এইটা আসলে এখন আর মানতে চাচ্ছে না কেউ। বলা হচ্ছে যে ঝুঁকি যাদের থাকে, তাদের আমরা দেব না। তবে যাঁর ঝুঁকি নেই তাকে আসলে এইচআরটি থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।