থাইরয়েড রোগে কর্মক্ষমতা কমে যায়
থাইরয়েড শরীরের একটি গ্রন্থি। থাইরয়েডের সমস্যা হলে সাধারণত রোগীর কর্মক্ষমতা কমে যায়। তাই থাইরয়েডের রোগ নিয়ে সচেতনতা প্রয়োজন। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৪৯তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অধ্যাপক ফরিদুল আলম। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব।
প্রশ্ন : থাইরয়েড রোগ নিয়ে কাউকে জানতে বা বলতে শোনা যায় না তত বেশি। এর কারণ কী?
উত্তর : হৃদরোগ, পেটে ব্যথা যেমন হঠাৎ রোগ হিসেবে আসে, অন্য রোগ এ রকম আসে না। থাইরয়েড সাধারণত দীর্ঘমেয়াদে রোগ। তবে হঠাৎও হতে পারে। যেমন : থাইরয়েড স্ট্রম, অথবা হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে মিক্সিডিমা। এগুলো হঠাৎ হতে পারে। জীবনঘাতী হতে পারে। থাইরয়েড রোগের প্রভাব হলো সামাজিক। কারণ, এই রোগ হলে আমাদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। অর্থাৎ দেশের জিডিপি পর্যন্ত কমে যেতে পারে। মানুষের বুদ্ধি কম থাকে, তার কার্যক্ষমতা কম থাকে। অফিসে কর্মক্ষমতা কম থাকে। তার বুদ্ধিবৃত্তি কম, মানসিক বৃত্তি কম। তাই থাইরয়েডের কারণে তার সামাজিক প্রভাবটা বেশি। এই জন্য এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা একান্ত প্রয়োজন। আমরা এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেছি।
আপনারা জানেন যে অ্যাসোসিয়েশন কী করতে পারে? যেমন ডায়াবেটিসের কথা ভাবুন, এটি সারা বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগের সচেতনতা, চিকিৎসা, গবেষণা ও শিক্ষার জন্য তারা ব্যাপক কার্যক্রম করে যাচ্ছে। যেটা সরকারের চেয়েও বেশি। কাজেই অ্যাসোসিয়েশনের ভূমিকা অত্যন্ত। আমরা থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশন করেছি এই উদ্দেশ্যেই যেন আমরা রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পারি। ডাক্তারদের মধ্যে যেন থাইরয়েডের বিষয়ে আরো বেশি শিক্ষা দিতে পারি, সেমিনার করতে পারি, যেন তারা থাইরয়েড নির্ণয় করতে পারেন এবং চিকিৎসা দিতে পারেন। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা সারা দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে চাই।
এই বছর থাইরয়েড দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘ ইট ইস নট মি, ইট ইজ মাই থাইরয়েড। মানে, আমার আজকের যে অবস্থা তার জন্য থাইরয়েড অনেক দায়ী। এই জন্য আমরা থাইরয়েডকে জানতে বলব। এই জন্য আমরা র্যালি করব, সেমিনার করব। সারাদেশে থাইরয়েড সম্পর্কে পোস্টারিং করব। আমরা আশা করি, সোসাইটির কার্যক্রমের কারণে রোগীরা উপকৃত হবেন।
প্রশ্ন : থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশনের বাইরে আর কী কী পদক্ষেপ আপনারা সামনে নিতে চলেছেন?
উত্তর : আমাদের চিকিৎসকদের যেন উন্নয়ন হয়, অর্থাৎ তাদের যেন এই থাইরয়েড সম্পর্কে আরো জ্ঞান বাড়ে সেটি চাচ্ছি। আমরা যারা এমবিবিএস করে এসেছি তাদের থাইরয়েড সম্পর্কে জ্ঞান খুব ভাসা ভাসা। আমরা চাইছি থাইরয়ের গুরুত্বটাকে আরো বেশি বোঝাতে।
আপনারা জানেন, বাংলাদেশের এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ও অন্যান্য থাইরয়েডলজিস্ট যারা আছেন, তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। সাধারণ চিকিৎসক যেন থাইরয়েড নির্ণয় ও চিকিৎসা করতে পারেন, সেটি আমাদের একটি উদ্দেশ্য।