শিশুর ভাষা বিকাশ না হওয়ার পেছনে কারণ কী?
শিশুর ভাষা বিকাশ সম্পূর্ণ না হওয়া বা দেরি করে হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৪৫তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. ফাহমিদা ফেরদৌস। বর্তমানে তিনি জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মানসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অবাচনিক বা বাচনিক পদ্ধতিতে শিশু যোগাযোগ করে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এতে একটু সমস্যা হয়। ভাষার বিকাশ করতে কোনো ক্ষেত্রে দেরি হয়, আবার কোনো ক্ষেত্রে একেবারে হয় না। এই যে ভাষার বিকাশ, এটি দেরি হওয়ার পেছনে বা না হওয়ার পেছনে কারণ কী?
উত্তর : আমরা যেকোনো ভাষার সমস্যাকে দুটো পর্যায়ে ভাগ করি। একটি হলো অর্জিত ভাষা সমস্যা। আরেকটি হলো মাতৃগর্ভ থেকে নিয়ে আসা ভাষা সমস্যা। অর্জিত ভাষা সমস্যা হলো, শিশু জন্মের পরে মস্তিষ্কে কোনো ক্ষতি বা বৃদ্ধির বিকাশের অসুবিধা থাকলে তার ভাষা বিকাশে সমস্যা হবে। আর যাকে বলছি মাতৃগর্ভ থেকে নিয়ে আসা বা বৃদ্ধিগত সমস্যা, এটি শিশুটি তার মায়ের গর্ভ থেকেই নিয়ে আসতে পারে। যেটি অর্জিত ভাষা বৈকল্য, সেটির কারণ পরিবেশ হতে পারে। অথবা মস্তিষ্কের কোনো ক্ষতের কারণে হতে পারে।
প্রশ্ন : শিশুর জন্মের সময় হয়তো কোনো সমস্যা নেই। তবে শিশুটি হয়তো কথা বলছে না। এতে পরিবেশগত কি সমস্যা ছিল? করণীয় কী ছিল?
উত্তর : সাধারণত দেখা যায় শিশু যখন খুব বিরক্ত করে আমরা তাকে ওয়ানওয়ে কমিউনিকেশন (একমুখী যোগাযোগ) দিয়ে থাকি। এর মধ্যে টিভি, ভিডিও গেমস ও মোবাইল রয়েছে। কান্না করছে হয়তো মোবাইলটা হাতে দিয়ে দিলাম। অথবা টিভি দেখিয়ে দেখিয়ে খাওয়াচ্ছি। এতে শিশু কিন্তু হিন্দি অথবা ইংলিশ শুনছে। আমরা সারা দিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করছি বাংলা ভাষা দিয়ে। তবে সে টিভিতে বেশির ভাগ সময় অন্য ভাষা দেখছে। তখন পরিবেশগত কারণে শিশুটির ভাষা অ্যাকুইজিশন বা অর্জনের ক্ষেত্রে বৈকল্য হয়ে থাকে। সাধারণত পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে একটি শিশুর ব্যাসিক ল্যাঙ্গুয়েজ ডেভেলপমেন্ট (মূল ভাষার বৃদ্ধি) হয়ে যাবে। এ সময়টা তার মূল অর্জিত ভাষা হবে তার নিজ মাতৃভাষা। ইংলিশ অথবা হিন্দি নয়।