মা দিবস : মাকে যে মেডিকেল টেস্টগুলো করাবেন
ধরুন, খুব জ্বর হয়েছে আপনার। এ সময় সবার আগে কার সান্নিধ্য পেতে ইচ্ছে করে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়ের। মায়ের মমতাময়ী হাতের স্পর্শ যেন এ সময় টনিকের মতো কাজ করে। সাধারণত অসুখ-বিসুখে মায়েরা সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সন্তানকে সুস্থ করে তোলেন। তবে মায়ের অসুখে কতটুকু সচেতন থাকি আমরা?
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মায়েরা নিজেদের শরীরের যত্নের বেলায় বেশ উদাসীন থাকেন। দেহে বাঁধিয়ে বসেন বিভিন্ন রোগব্যাধি। তাই সন্তানেরই দায়িত্ব প্রবীণ বয়সে মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা।
যেহেতু প্রবীণদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু কমে যায়, তাই এ সময় নানা রোগব্যাধি হয়। নারীদের মেনোপজ বা দীর্ঘ মেয়াদে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হৃদরোগ, হাড়ের ক্ষয় ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ সময় কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখা খুবই জরুরি। আর মাকে এই পরীক্ষাগুলো করাতে নিয়ে যেতে পারেন আপনিই।
যেসব মেডিকেল টেস্ট প্রবীণ বয়সে মাকে করাতে পারেন, তার একটি তালিকা দিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই।
১. মেনোপজ
স্তন ক্যানসার নারীদের খুব প্রচলিত একটি রোগ। এই ক্যানসারের কারণে সারা বিশ্বে প্রতিবছর হাজার হাজার নারীর মৃত্যু হয়। তাই যে নারীর বয়স ৪০ পার হয়েছে, তার অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ব্রেস্ট স্ক্যান বা মেমোগ্রাম করানো উচিত। চিকিৎসক চাইলে আলট্রাসাউন্ডও করতে পারেন। প্রতিবছর এ পরীক্ষা করাতে হবে।
২. হাড়ের ঘনত্বের পরীক্ষা
মেনোপজের পর সাধারণত হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। এটি নারীদের আরেকটি প্রচলিত সমস্যা। এ কারণে অস্টিওপরোসিস হয়। তাই ৪০ বছর পর থেকে প্রতিবছর অবশ্যই বোন ডেনসিটি স্ক্যান করাবেন।
৩. কোলস্কোপি
প্রবীণ নারীদের আরেকটি প্রচলিত সমস্যা হলো কোলনে ক্যানসার। ৫০ বছর হলে প্রত্যেক নারীকে প্রতিবছর একবার করে কোলনের পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। তবে পরিবারে যদি কারো কোলনে সমস্যা থাকে, তাহলে আগে থেকেই এ পরীক্ষা করান।
৪. চোখের পরীক্ষা
বয়স বাড়তে থাকলে মায়োপিয়া, প্রেসবায়োপিয়া, গ্লুকোমা, ছানি ইত্যাদি সমস্যা হতে থাকে। ৪০ বছরের পর অবশ্যই নারীদের নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। পাশাপাশি যাঁরা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও অবশ্যই চোখ পরীক্ষা করাতে হবে। কেননা, ডায়াবেটিসের কারণে অনেক সময় চোখের রেটিনায় সমস্যা হয়।
৫. দাঁতের পরীক্ষা
মুখগহ্ববরের ক্যানসার প্রতিরোধে দাঁত পরীক্ষা খুব জরুরি। তাই নিয়মিত এই পরীক্ষা করাবেন।
৬. হার্ট চেকআপ
মেনোপজের পর নারীদের হৃদরোগ বাড়ার ঝুঁকি থাকে। ওজন বেশি থাকলে, পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে, উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত হার্ট চেকআপ করুন। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
৭. জরায়ুমুখের ক্যানসার
জরায়ুমুখের ক্যানসার আরেকটি প্রচলিত সমস্যা নারীদের। তাই গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে অবশ্যই ৪০ বছর থেকে এই পরীক্ষা করান।
৮. লিপিড প্রোফাইল
হৃদরোগের একটি বড় কারণ হলো শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া। লিপিড প্রোফাইল করলে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল অথবা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল), হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল অথবা ভালা কোলেস্টেরল) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। এতে কোলেস্টেরলের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।