অ্যালার্জি কী, কেন হয়?
বিভিন্ন অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলে অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। একজন লোকের ক্ষেত্রে একেকটি বিষয়ে অ্যালার্জি হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৭১৪তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অ্যালার্জি ও ক্লিনিক্যাল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক।
প্রশ্ন : অ্যালার্জি কী?
উত্তর : আমাদের শরীরের একটি বৈশিষ্ট্য হলো—যখন কোনো শত্রু, যেটি শরীরের জন্য উপকারী নয় এবং শরীরের সামনে বারবার আসে, তখন শরীর এর প্রতি একটি প্রতিরোধ গড়ে তোলে। একে বলা হয় ইমিউনিটি। তবে যখন শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন স্বাভাবিক জিনিস সামনে আসে, তবুও এর বিরুদ্ধে যখন শরীর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, তখন একে বলে অ্যালার্জি। যেমন ধরেন আমরা ডিম, মাছ, মাংস, সবজি খেয়ে থাকি। সবাই খায়। তবে কিছু মানুষ আছে, যাদের এগুলো খেলে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়। একে বলে অ্যালার্জি।
প্রশ্ন : আমাদের শরীরের যে ইমিউন পদ্ধতি আছে, সেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীর যাতে আক্রান্ত না হয়, বাইরের শত্রুর থেকে যখন রক্ষা করে। সেখানে কেন তার শত্রু চিহ্নিত না করে, যে শত্রু নয়, তার প্রতিও সে বিরূপ হয়?
উত্তর : আমাদের শরীরে অনেক ইমিওগ্লুবিন আছে। এর মধ্যে আইজিই খারাপ অ্যান্টিবডি। এই ইমিওগ্লুবিনটা যাদের শরীরে বেশি থাকে, তারা এই শত্রুকে চিনতে পারে না। তখন সে স্বাভাবিক জিনিসের প্রতিও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। একটি পরিবারে মনে করেন, পাঁচটি ভাইবোন আছে। চারজনের কিছু হবে না। যার এই আইজিইর পরিমাণ বেশি, তার স্বাভাবিক জিনিসের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া করে অ্যালার্জি তৈরি করে। আইজিই মূলত এর জন্য দায়ী।
প্রশ্ন : সাধারণত কোন কোন জিনের প্রতি অ্যালার্জি কাজ করে?
উত্তর : অ্যালার্জিজনিত রোগগুলোর মধ্যে যেমন ধরেন অ্যাজমা। এর অন্যতম কারণ হলো হাউজ ডাস্ট মাইট। বাড়িতে ধুলাবালির মধ্যে একটি কীট থাকে। এটি অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জির জন্য দায়ী। এ ছাড়া বিভিন্ন রকম ফুলের রেণু, ছত্রাক, পশুপাখির লোমকূপ, বিভিন্ন রকম খাদ্য এগুলো থেকে সাধারণত সমস্যা হয়।
প্রশ্ন : অনেকের বেলায় দেখি ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খেল, আইসক্রিম খেল কিংবা ঠান্ডায় গেল বা তাপমাত্রা এদিক-ওদিক হলো, তাদের বেলায় কেন হয়? কারো কারো ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি বৃষ্টির পানি লাগলে শরীরের মধ্যে চাকচাক হয়ে যায়। কিংবা কোনো কিছু শরীরে লাগল, এরপর তার পুরো শরীর চাকচাক হয়ে গেল। এর কারণ কী?
উত্তর : তাপমাত্রা এদিক-সেদিকের জন্য অনেক সময় সমস্যা হয়। একে বলা হয় আর্ডিকেরিয়া। এটিও অ্যালার্জির একটি অংশ। অনেক সময় এর কারণ জানা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাবার পাওয়া যায়। অনেক সময় লোমকূপের সংস্পর্শে হয়। কোনো বিষাক্ত পদার্থ এলে হয়। হওয়ার পর শরীরে একটু চাকচাক হয়। এর পর ওষুধ খেলে দুই-চার ঘণ্টা পর ঠিক হয়ে যায়।