যে কারণে ডায়াবেটিস রোগীরা বিষণ্ণ থাকেন
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা নির্মূল করা যায় না; বরং একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আর যাঁরা এই নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারছেন না, তাঁদের জন্য গবেষকরা দিচ্ছেন দুঃসংবাদ। যদি আপনি ডায়াবেটিসের রোগী হন এবং দেরি করে ঘুমাতে যান, তাহলে আপনার মনে বাসা বাঁধতে পারে বিষণ্ণতা। বোল্ডস্কাইয়ের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষকরা বলছেন, যাঁরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি নিজেদের রাত জাগা পাখির ভূমিকায় দেখতে চান, তাঁরা সব কাজ করার জন্য সকালের চেয়ে বিকেলের সময়টাকেই বেছে নেন। বিকেলটাকেই হাঁটাহাঁটি করার জন্য উপযুক্ত মনে হয় তাঁদের কাছে। এমনভাবে চললে ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ অনেক বেশি দেখা দেবে। অন্যদিকে যেসব ডায়াবেটিস রোগী দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েন এবং দ্রুত ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁরা বিষণ্ণতায় খুব একটা আক্রান্ত হন না।
‘এই আবিষ্কারটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিষণ্ণতা প্রায় সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে পাওয়া যায়,’ বলছিলেন থাইল্যান্ডের মাহিডলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ব্যাংককের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রধান গবেষক শিরিমন রেওত্রাকুল।
এ ছাড়া গবেষণাটি মনে করে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে মানসিক সক্রিয়তা এবং সার্কাডিয়ান রেগুলেশনের (দিনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে শরীরে বিভিন্ন অবস্থার চক্র) একটি যোগসূত্র রয়েছে। ‘বিষণ্ণতা এবং সার্কাডিয়ান রেগুলেশনের সক্রিয়তার মধ্যকার সম্পর্কের প্রসঙ্গ জানাটা আমাদের ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে কৌশল নির্ধারণ করতে সহয়তা করবে,’ বলছিলেন রেওত্রাকুল।
এনড্রোক্রাইন সোসাইটির ৯৯তম বার্ষিক সম্মেলনে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওপর চালানো গবেষণাটির ফল প্রকাশ করা হয়।
একজন মানুষের ঘুমানোর প্রবৃত্তি মূলত ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। বিষুবরেখার কাছে যাঁরা অবস্থান করেন, তাঁদের সকাল অন্য সবার চেয়ে একটু আলাদা হয়। তাই গবেষকরা শিকাগো ও থাইল্যান্ডের মতো ভিন্ন দুটি দেশের ডায়াবেটিসের রোগীদের ওপর গবেষণাটি চালিয়ছেন।
এ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর প্রায় ১৯৪ জন রোগী অংশ নেন, যার ৭০ শতাংশ ছিল নারী। আর থাইল্যান্ডে ছিল ২৮২ জন রোগী, যার মধ্যে ৬৭ শতাংশ নারী। এঁদের মধ্যে যাঁরা রাতে তাড়াতাড়ি বিছানায় যান, সকালে উঠে হালকা ব্যায়াম সাড়েন, তাঁরা কম বিষণ্ণ থাকেন।