শিশুদের হৃদরোগ : ধরন কেমন
অনেক সময় শিশুদের জন্মগত হৃদরোগ হয়। তবে এর বাইরেও শিশুদের হৃদরোগের সমস্যা হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৭০২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. তারিকুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : শিশু বয়সে কী হৃদরোগ হতে পারে? হলে কী ধরনের হয়?
উত্তর : হ্যাঁ, অবশ্যই হতে পারে। আসলে এখন পেডিয়াট্রিকস বলতে বোঝায় ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত। ১৮ বছর মানে মোটামুটি বড়। বড়দের যে রোগগুলো হয়, সেগুলোরও অনেক সমস্যা আমরা অনেক আগেই দেখছি। জন্মগত হৃদরোগ ছাড়া যেটা হয়, আমরা রিউমেটিক ফিভারের নাম শুনেছি, রিউমেটিক ফিভার থেকে যদি হার্টের ভাল্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ আমরা সবসময়ই পাই। উচ্চ রক্তচাপে বাচ্চাদের ও বড়দের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। বড়দের ক্ষেত্রে বেশির ভাগই দেখা যায় যে ইডিওপ্যাথিক, ৮০ থেকে ৯০ ভাগ। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা ঠিক উল্টো। দেখা যায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ বাচ্চাদের যে উচ্চ রক্তচাপ হয়, সেটি অন্য কোনো কারণে হয়। হয়তো কিডনির সমস্যার জন্য অথবা কোনো হরমোনজনিত কারণে, অথবা হার্টের কারণে সমস্যা হয়। প্রাইমারিও হয়।এটি প্রধানত হয়, যদি পারিবারিক ইতিহাস থাকে, যে পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস আছে, অথবা অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে দেখা যায় শারীরিক পরিশ্রম করে না, তাদের ক্ষেত্রে হাইপার কোলেস্টেরলেমিয়া হতে পারে। এসব কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে; হার্টে সমস্যা হতে পারে।
প্রশ্ন : কিশোর বয়সে আর কী কী সমস্যা হতে পারে? হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগ কি শিশুদের বা কিশোর বয়সে হতে পারে?
উত্তর : হতে পারে। তবে খুব কম। আমরা পাই না যে সেটি নয়। তবে সেটি খুব কম। এ ছাড়া আরো একটি সমস্যা হতে পারে। একে আমরা বলি এরিদমিয়া। হার্টের যে রিদম সেটার অস্বাভাবিকতা। এই এরিদমিয়া রোগীর হঠাৎ করে হার্ট ব্লক হতে পারে। হার্ট ব্লক হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
প্রশ্ন : এরিদমিয়ার ক্ষেত্রে কারা ঝুঁকিপ্রবণ?
উত্তর : যাদের জন্মগত হৃদরোগ আছে, এদের ক্ষেত্রে এই এরিদমিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
প্রশ্ন : এমন কোনো হৃদরোগ আছে কি যেগুলো জন্মগতভাবে হয়েছে, তবে আগে বোঝা যায়নি। পরে শিশু বা কিশোর বয়সে এসে বোঝা গেল?
উত্তর : এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রচলিত যেটি সেটি হলো এট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্ট। আমরা বলি এএসডি। এতে বলাই হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই লক্ষণ দেখা যায় ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সে গিয়ে। অনেক সময় হঠাৎ অন্য কোনো রুটিন পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গেল তার হার্টে ছিদ্র। এর কারণ হলো এখানে দুটো যে এট্রিয়াম, এর মধ্যে ছিদ্রটি। এই দুই এট্রিয়ামের মধ্যে প্রেশারের পার্থক্য আসলে খুব কম। এতে লক্ষণ বাড়তে বেশি সময় লাগে।