আজ ২৪ মার্চ, বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। এবারের যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘যক্ষ্মা নির্মূলে ঐক্যবদ্ধ হোন—বাদ যাবে না একজনও’।

২০১৭ সাল ‘যক্ষ্মা নির্মূলে ঐক্যবদ্ধ হোন’—এই বিশেষ ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় বছর। গত বছর একই থিম নিয়ে কাজ করা হয়েছে। এবার এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ‘বাদ যাবে না একজনও’ বাক্যটি। দেখা যায়, এ জাতীয় প্রায় সব কর্মসূচিতেই সমাজের একটা অংশ বাদ পড়ে যায়। এরা হলো সমাজের দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করা সুবিধাবঞ্চিত মানুষ। অথচ এরাই যক্ষ্মা রোগের প্রধান শিকার।

সমাজের এই অংশটিকে বাইরে রেখে যক্ষ্মা নির্মূলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়। যক্ষ্মা রোগটি বিশ্বব্যাপী যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে। জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা’র একটি অংশ হলো ‘২০৩০ সালের ভেতর যক্ষ্মা নির্মূল করা’। সমাজের সব স্তরের মানুষকে এই সচেতনতা কর্মসূচির আওতায় আনতে না পারলে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।

হু-র সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৫ সালে ১০ দশমিক ৪ মিলিয়ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছে। এর ভেতর ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে।

যক্ষ্মা কেন হয়

যক্ষ্মা মূলত একটি সংক্রামক রোগ। বলা হচ্ছে, সংক্রামক রোগের ভেতর সারা পৃথিবীতে যক্ষ্মাই ‘টপ কিলার’ বা ‘শীর্ষ খুনি’। মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামে এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ী। জীবাণুর সঙ্গে মিলিয়ে ডাক্তারি ভাষায় এই রোগের নাম রাখা হয়েছে ‘টিউবারকুলোসিস’। সংক্ষেপে টিবি নামেই সবাই চেনে। এককালে যক্ষ্মাকে ‘ক্ষয় রোগ’ বা ‘রাজ রোগ’ বলা হতো। কারণ, এই রোগে রোগী খুবই শীর্ণ হয়ে পড়ে, আর মৃত্যু ছিল প্রায় অবধারিত।

যক্ষ্মা এখন নিরাময়যোগ্য অসুখ। তবে এর কোনো প্রতিষেধক বা ভ্যাক্সিন নেই।

যক্ষ্মা কীভাবে ছড়ায়

যক্ষ্মা রোগ ছড়ায় মূলত বাতাসের মাধ্যমে। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে রোগের জীবাণু আরেক ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া কাঁচা দুধ, পাস্তুরিত দুধের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে যক্ষ্মা।

ঘন বসতি, নোংরা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিম্ন জীবনমান, অপুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব ইত্যাদি যক্ষ্মা সংক্রমণে সাহায্য করে।

কাদের হয়, কোথায় হয়

যেকোনো বয়সে যক্ষ্মা হতে পারে। শিশু ও বৃদ্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে এদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসে। তবে যক্ষ্মা প্রায় যেকোনো অঙ্গে হতে পারে। হয় না কেবল হৃৎপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়, ঐচ্ছিক মাংসপেশি ও থাইরয়েড গ্রন্থিতে।

লেখক : রেসিডেন্ট, বিএসএমএমইউ।