সিওপিডি নিরাময়যোগ্য নয়
শ্বাসতন্ত্রের জটিল রোগ সিওপিডির চিকিৎসা রয়েছে। তবে এটি পুরোপুরো নিরাময় করা যায় না। তাই সতর্ক থাকা জরুরি। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ২৬৫২তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ। বর্তমানে তিনি এম এইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজের বক্ষব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম আপনারা মেনে চলেন।
উত্তর : যখন কফ পেকে যায়, হলুদ হয়ে যায়, রোগীর যখন জ্বর আসে, তখন আমরা কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক দিই। সঙ্গে সপ্তাহে তিন দিন পরপর অন্য আরেকটি ক্যাপসুল খাওয়াই। এখানে কোলিনবিরোধী যে নেবুলাইজার আছে, সেগুলো ব্যবহার করি। নতুন ধারার চিকিৎসা এসেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ব্যবহার করতে হয়। এমন রোগী আছে দিনে ১৬ ঘণ্টাই তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখতে হয়। কারণ, অক্সিজেন ছাড়া সে বাতাস পাচ্ছে না। তারপরও যদি আমরা রোগীকে কোনোমতে বুঝিয়ে ধূমপান বন্ধ করাতে পারি, কিছুটা হলেও উপকার পায়।
প্রশ্ন : এই রোগ থেকে দূরে থাকতে ধূমপানকে ত্যাগ করতে হবে। এর সঙ্গে আর কী কী করণীয় আছে।
উত্তর : সবচেয়ে বড় কথা আমরা বলব যে ধূমপান একেবারেই করবেন না। আমরা চাই না কোনো একটি মানুষ সিওপিডিতে আক্রান্ত হোক। কারণ, এর তো কোনো চিকিৎসা নেই। আমরা কেবল জোড়াতালি দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। পশ্চিমা বিশ্বে আরো বেশি এটি তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে আমরা বারবার মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। আমরা ওই প্রটোকলগুলোই মেনে চলার চেষ্টা করি। ‘লামা লাবা’ নামের একটি চিকিৎসা পদ্ধতি আছে, সেটা দেওয়ারও চেষ্টা করি আমরা।
শীতের বেলায় রোগীকে খুব সচেতন হতে হবে। সূর্য না ওঠা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। যত দূর সম্ভব ধূমপান এড়িয়ে যেতে হবে। আর আমরা রোগীকে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন দিই। তিন বছর পরপর। আবার ভ্যাকসিন দিই এক বছর পর পর, যাতে করে জীবাণুর সংক্রমণ না হয়। জীবাণুর সংক্রমণ যত বেশি হবে, ফুসফুসের অবকাঠামো তত নষ্ট হবে। যত বেশি নষ্ট হবে, তত খারাপের দিকে যাবে। একটি পর্যায়ে হার্টকে সম্পৃক্ত করবে। হার্ট ফেইলিউর বৃদ্ধি পাবে। পায়ে পানি চলে আসবে। লিভার বড় হয়ে যাবে।
রোগী যখন আসে, আমরা অনেকগুলো উপদেশ দিই। এরপর চিকিৎসায় যাই। ইনহেলার নিতেই হবে। ইনহেলার কিন্তু অনেকে নিতে জানে না। এতে ইনহেলারের যে ভালো ফলাফল, সেটি পাচ্ছে না। উল্টোভাবে নিচ্ছে অথবা চাপ দিয়ে ওষুধটা গিলে ফেলছে। ইনহেলার একটি প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে আমরা একটি ওষুধ ব্যবহার করি। চাপ দিবে সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসের সঙ্গে নেবে। তবে বেশির ভাগ সময় আমরা ইনহেলার লিখে দিই। তবে প্রয়োগ বিধিটা বুঝিয়ে দিই না।