এপ্রিলে মুক্তি পাচ্ছে পাঁচটি ছবি
বর্তমান সময়ে সিনেমা হলে নতুন ছবির সংখ্যা কমে যাচ্ছে তাই এই ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হলের মালিকরা। বেশির ভাগ সময় পুরনো ছবি চালিয়েই কর্মচারী আর মেশিনের খরচ তুলতে হয় তাঁদের। কারণ নতুন ছবির সংখ্যা তেমন থাকে না। তবে এই এপ্রিলে হাসি ফুটতে পারে হলমালিকদের মুখে। কারণ এই মাসের প্রতি সপ্তাহেই ছবি মুক্তি পাবে সারা দেশে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে দুটি ছবি। চলুন দেখে নিই আসন্ন ছবিগুলোর কী কী।
পাগলা দিওয়ানা
আসছে ৩ এপ্রিল মুক্তি পেতে যাচ্ছে পরীমনির নতুন ছবি ‘পাগলা দিওয়ানা’। ‘পাগলা দিওয়ানা’ ছবির পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমন বলেন, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অনেক নতুন নায়ক-নায়িকা নিয়ে আমি কাজ করেছি। নতুন শিল্পীকে কীভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয় সেটা আমি জানি। পরীমনিকে নিয়ে বর্তমানে অনেক ছবিই হচ্ছে। রোমান্টিক অ্যাকশন ছবিতে একজন নতুন নায়িকাকে দর্শকরা যেভাবে পছন্দ করেন, ‘পাগলা দিওয়ানা’ ছবিতে পরীকে সেভাবেই উপস্থাপন করেছি। আমার বিশ্বাস, এ ছবিতে পরীমনির মধ্যে একজন অন্যতম সেরা নায়িকাকে খুঁজে পাবে চলচ্চিত্র শিল্প।’
‘পাগলা দিওয়ানা’ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, “আমি খুবই আনন্দিত। খুব চমৎকার প্রেমের গল্প এটি। আমি আশা করি প্রথম ছবির মতো দ্বিতীয় চলচ্চিত্রেও দর্শক আমাকে একইভাবে গ্রহণ করবে।’
মিজানুর রহমানের প্রযোজনা এবং পুতুল কথাচিত্রের পরিবেশনায় ‘পাগলা দিওয়ানা’ ছবিতে পরীমনির সঙ্গে আরো অভিনয় করেছেন শাহ রিয়াজ, সবুজ, অমৃতা, মিশা সওদাগর, রুবেল, আলীরাজ প্রমুখ। ছবির গানগুলো লিখেছেন কবির বকুল ও সুদীপ কুমার দীপ। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আহমেদ হুমায়ুন।
গুণ্ডা
ইস্পাহানি আরিফ জাহান পরিচালিত ‘গুন্ডা’ ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ১০ এপ্রিল। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বাপ্পী চৌধুরী, আঁচল, অমৃতা খান ও তানভীর। ছবির গল্পে দেখা যায় আঁচলকে তার পরিবারের তরফ থেকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আঁচল বিয়ে করতে চাচ্ছে না। কারণ পছন্দের ছেলেকে সে পায়নি। তার পছন্দ এমন ছেলে যে হবে অনেক সাহসী এবং ভালোবাসবে শুধু তাকেই। একদিন ঘটনাচক্রে বাপ্পীর প্রেমে পড়ে যায় আঁচল।
ছবির পরিচালক ইস্পাহানি আরিফ জাহান বলেন, ‘বাপ্পী ও আঁচল জুটিবদ্ধ হয়ে অনেক ছবিই করেছে। এর মধ্যে তারা সফল, কারণ দর্শক এই জুটিকে পছন্দ করেছে। তবে তাদের বেশির ভাগ ছবিই প্রেমনির্ভর, আমি এই ছবিতে বাপ্পীকে অ্যাকশন হিরো হিসেবে উপস্থাপন করেছি। বাপ্পীর অভিনয়, নাচ, ফাইট প্রত্যেকটি বিষয়ের সাথে তার অ্যাকশনটা খুব যায়। তা ছাড়া ছবি মানেই প্রেমের ছবি হতে হবে আমি তা মনে করি না। আমার এর আগের ছবিতে দর্শক আলাদা ধরনের গল্প পেয়েছেন। এই ছবিতেও অন্য ধরনের মজা পাবেন যা আমরা প্রকাশ করছি না। আর আঁচল চঞ্চল মেয়ের চরিত্রে ভালো অভিনয় করেছে। বড়লোকের আদরের মেয়ে কিন্তু অ্যাকশন খুব ভালোবাসে। আঁচলের চরিত্রের জন্য অনেক মজার দৃশ্য ছিল যা দর্শকদের আলাদা আনন্দ দেবে। আমি আশা করি দর্শক ছবিটি ভালোভাবে গ্রহণ করবে।’
ছুঁয়ে দিলে মন
শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ১০ এপ্রিল। এই ছবির অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘ছুঁয়ে দিলে মন যেন দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, এটাই আমাদের সবার চেষ্টা ছিল।’
ছবির নায়ক আরিফিন শুভ বলেন, ‘এই সময়ে যত ছবি হচ্ছে তার বেশির ভাগই প্রেমের ছবি। সব ছবিতে বলতে হয় আমি তোমাকে ভালবাসি কিন্তু এই ছবিতে দর্শক একটা ব্যতিক্রম প্রেম দেখবে যেটা হলে এসে দেখলেই দর্শক ভালোভাবে গ্রহণ করবে। আমার মনে হয় এই ছবি একটা মাইল ফলক হবে।’
পরিচালক শিহাব শাহীন বলেন, “এর আগে আরিফিন শুভকে নিয়ে একটি বড় বাজেটের টেলিছবি তৈরি করেছিলাম। নাম ‘ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই’। শুভকে নিয়েই কাজ করেছি আমার প্রথম ছবিতে। আর মম চলচ্চিত্রে কাজ করছেন, এরই মধ্যে তা অনেকেই জেনে গেছেন। আমি আশা করছি দর্শক এই জুটিকে পছন্দ করবেন।”
অবাস্তব ভালোবাসা
আগামী ১৭ এপ্রিল সারা দেশে মুক্তি পাবে জয় চৌধুরী ও নবাগত মাহিয়ান চৌধুরী অভিনীত ছবি ‘অবাস্তব ভালোবাসা’। কাজল কুমার পরিচালিত এই ছবিটির কাহিনী লিখেছে আব্দুল্লাহ জহির বাবু।
আলী আকরাম শুভর সংগীত পরিচালনায় ছয়টি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা, এ্যান্ড্রু কিশোর, বেবি নাজনিন ও এস আই টুটুল। রোমান্টিক অ্যাকশন ধাঁচের এই ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজী হায়াৎ, মিজু আহমেদ, ইলিয়াস কোবরা, রেহেনা জলি, রেবেকা শিউলি, বিপাশা কবির, তানিন, সাংকু শাহীনসহ আরো অনেকেই।
চিনি বিবি
এই মাসের শেষ সপ্তাহে অর্থ্যাৎ আগামী ২৪ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে গ্রামবাংলার ছবি ‘চিনি বিবি’। ছবিটির পরিচালক নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘এটি একেবারে গ্রামবাংলার গল্প নিয়ে ছবি। এখনকার সময়ে যে ছবি হয় তার প্রায় সবই শহরের জীবনকে কেন্দ্র করে। অথচ আমাদের দেশের আশি ভাগ মানুষ বাস করে গ্রামে। যারা সহজ গল্প শুনতে ভালোবাসে, তাদের জীবনের সাধারণ গল্প নিয়েই আমাদের এই ছবি।’
‘চিনি বিবি’ ছবিতে দেখা যাবে, দুরন্ত এক ষোড়শী কন্যা চিনি একদিন পরিবারের সবাইকে বোকা বানিয়ে বান্ধবীদের সাথে নদীতে গোসল করতে যায়। ফেরার পথে চিনির ভাব বিনিময় হয় মানিকের সাথে। মানিকের চোখেও চিনির রেশ লেগে যায়। কিন্তু সমস্যা হলো চিনি শুধু মানিকের চোখে নয়, লালের চোখেও পড়ে। লাল চিনিকে দেখেই তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এখান থেকেই শুরু হয় গল্পের মূল আকর্ষণ।
এই ছবিতে জয় ও মিষ্টি জান্নাত ছাড়াও আরো অভিনয় করেছেন আলীরাজ, আনোয়ারা, আবদুল্লাহ সাকি, ওয়াদুদ রঙ্গিলা, ববিসহ দেড় শতাধিক শিল্পী। ছবিতে ১০টি গানে বাংলাদেশের ১১ জন স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী কণ্ঠ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন এন্ড্রু কিশোর, সাবিনা ইয়াসমিন, মনির খান, কনকচাঁপা, রাজীব, বেবি নাজনীন, আগুন, মমতাজ, ইতি, রিয়াদ ও ওয়াদুদ রঙ্গিলা।
চলচ্চিত্রটির আবহ সংগীত করেছেন ইমন সাহা, যন্ত্রসংগীত করেছেন আলমগীর, গীতিকার ও সুরকার ওয়াদুদ রঙ্গিলা।