কষ্ট পেয়েছি তবুও খুশি : নিশাত
নিশাত নাওয়ারের ফেসবুক প্রোফাইলে এখন সবার নজর। এর কারণ তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের ইন্ট্রোতে এখন লেখা ‘ফার্স্ট রানারআপ মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৮’।
ফেসবুকে ফলোয়ার বেড়েছে। আসছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এবং মেসেঞ্জারে অনেক বার্তাও। বিষয়টা খুব উপভোগ করছেন এবারের মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার প্রথম রানারআপ নিশাত নাওয়ার সালওয়া। বললেন, ‘খুব অবাক হয়েছি গতকাল প্রচুর অচেনা মানুষ আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন। বার্তাও পেয়েছি প্রচুর। বেশিরভাগ মানুষ আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।’
মিডিয়ায় একেবারে নতুন নন নিশাত। গত বছর তাহসানের ‘মন কারিগড়’ গানের মডেল হয়ে পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া অনেক ব্র্যান্ডের পোশাকের মডেল হতে তাঁকে দেখা গেছে।
মিডিয়ায় কাজ করতে চান তিনি শখের বশেই। তাঁর মূল লক্ষ্য পুলিশ অফিসার হওয়া। বললেন, ‘আমি ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ছি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনা শেষ করে সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই। পুলিশ অফিসার হওয়া আমার স্বপ্ন।’
পুলিশ হতে চাইলে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় কেন? উত্তরে নিশাত বলেন,‘এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। আমি চেয়েছি মিস ওয়ার্ল্ডে যেতে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে। এর পেছনে আরো একটা কারণও আছে। আমি জনসেবামূলক কাজ করতে চাই। এই চাওয়া আমার আগে থেকেই। মিডিয়ায় কাজ করলে পরিচিতি পাওয়া যায়। সহজে মানুষ চেনে। তখন দ্রুত সব মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়। আর যদি কোনো প্রতিযোগিতায় কাজ করে জয়ী হওয়া যায়, তাহলে সেটা অনেকখানি সহজ হয় বলেই আমি মনে করি। কয়েক দিন আগেও আমাকে কেউ চিনত না। একদিনের মধ্যে আমার জীবন বদলাতে শুরু করেছে।’
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ না হতে পেরে কোনো আক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে নিশাত বলেন, ‘সত্যি বলতে কষ্ট পেয়েছি, তবুও খুশি। আসলে একটুর জন্য জয়ী হইনি। দ্বিতীয় রানারআপ হলেও কষ্ট পেতাম না। অথবা সেরা দশে থাকলেও কোনো দুঃখ থাকত না। যাই হোক, ঐশী জয়ী হয়েছে। আমি মনে করি, ঐশী এর যোগ্য।’
মডেলিং ও অভিনয়ে দুটোতে আগ্রহ রয়েছে নিশাতের। বললেন, ‘কাজের সুযোগ পেলে মিডিয়াতে নিজেকে যোগ্য করে তুলব।’
এবারের ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন পিরোজপুরের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। প্রথম রানারআপ নিশাত নাওয়ার সালওয়া এবং নাজিবা বুশরা দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন।
গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার বসুন্ধরার কনভেনশন সিটির রাজদর্শন হলে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয় মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানটি সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিট থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে এটিএন বাংলা। চলে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠান যৌথভাবে উপস্থাপনা করেন আজরা মাহমুদ, ডি জে সনিকা ও আরজে নিরব। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগীতশিল্পী শুভ্র দেব, মডেল ইমি ও সুজন, অভিনেত্রী তারিন ও ব্যারিস্টার ফারাবি।
আইকন বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইলস ব্যান্ডের শাফিন আহমেদ, হামিন আহমেদ এবং নৃত্যশিল্পী আনিসুল হক হিরু।
‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার সেরা ১০ জনের মধ্যে ছিলেন শিরিন শিলা, মনজিরা বাশার, নিশাত নাওয়ার সালওয়া, ইশরাত জাহান সাবরিন, স্মিতা টুম্পা বাড়ৈ, আফরিন সুলতানা লাবণী, সুমনা নাথ অনন্যা, নাজিবা বুশরা, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী ও জান্নাতুল মাওয়া।
এবার ৩০ হাজারের মতো প্রতিযোগী অনলাইনে নাম নিবন্ধন করেছেন বলে জানান প্রতিযোগিতার আয়োজক প্রতিষ্ঠান অন্তর শোবিজের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী।
এর মধ্য থেকে আয়োজকরা এক হাজার ২০০ প্রতিযোগীকে বাছাই করেন। তাঁদের মধ্য থেকে বিচারকরা ১০ জন সেরা প্রতিযোগীকে নির্বাচিত করেন এবং তাঁদের মধ্য থেকে সেরা একজনকে বাছাই করা হয়।
গত বছর ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় প্রথম বিজয়ী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় এভ্রিলের। পরে এভ্রিলের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন রাখার অভিযোগ ওঠে। বাদ পড়েন তিনি। এরপর বিচারকদের রায়ে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ নির্বাচিত হন জেসিয়া ইসলাম। চীনের সাংহাই শহরে অনুষ্ঠিত ৬৭তম বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। প্রতিযোগিতার সেরা ৪০-এ ছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জেসিয়া ইসলাম। কিন্তু সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়েন এই সুন্দরী। সেবার ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ নির্বাচিত হন ভারতের মানসি চিল্লার।