প্রেরণা থাকলে সামনে এগোনো যায় : মিথিলা
দেশের জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। তাঁর আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের আর্লি চাইল্ডহুড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্যারিয়ার ক্যাম্প কর্মশালায় অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন মিথিলা। বক্তব্য দেওয়ার অভিজ্ঞতা ও একসঙ্গে এত কিছু কীভাবে পরিচালনা করেন, সে বিষয় নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন মিথিলা।
এনটিভি অনলাইন : ক্যারিয়ার ক্যাম্প কর্মশালায় বক্তৃতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত কবে থেকে আপনি নিয়েছেন?
মিথিলা : এটা আমি আমার নিজের উদ্যোগে শুরু করিনি। তরুণদের নিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মিত কাজ করছে, তারা আসলে আমাকে মোটিভেশনাল বক্তব্য দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করেছেন। এখনো করছেন। অনেক ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আমি কাজ করেছি। জাগো ফাউন্ডেশনের সঙ্গেও আমার কাজ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করেছে, আমি এমন একজন, যে কি না নিজের জীবনের গল্প বলে তরুণদের কাজে অনুপ্রাণিত করতে পারবে। যেমন আমি কীভাবে লেখাপড়া করেছি, আমার জীবনে সংগ্রাম আছে কি না, সেই সংগ্রাম কিংবা বাধা কীভাবে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি, এসব আর কী!
এনটিভি অনলাইন : অভিনয় করে তো সবার ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তা আপনি পেয়েছেন। প্রেরণামূলক বক্তৃতা দিয়ে আপনি কেমন সাড়া পেয়েছেন?
মিথিলা : খুব ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। অনেকে আমাকে মেসেঞ্জারে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউ কেউ আমার ফোন নম্বর নিয়েছেন। আমাকে মেইলও করেছেন অনেক। কেউ কেউ আমাকে ফোনে বলেছে, ‘আপু, আপনার সঙ্গে ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলতে চাই। আপনার জীবনের গল্প শুনে অনেক উৎসাহী হয়েছি। এখন আমি সেভাবে ক্যারিয়ার গড়তে চাই।’ বেশির ভাগ মানুষ তার ক্যারিয়ার কীভাবে গড়বে, সেটা নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। পরামর্শ শুনতে চায়। আমিও আমার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব বলার বলে থাকি।
এনটিভি অনলাইন : অভিনয় ও অন্যান্য কাজের পাশাপাশি যুব উন্নয়নে আপনি কি সব সময় কাজ করতে আগ্রহী?
মিথিলা : হ্যাঁ, যুব উন্নয়নে আমি কাজ করতে চাই। সুযোগ এলে কেন করব না! আমাদের দেশে তরুণদের সংখ্যা অনেক। তাঁদের মধ্যে অনেকে বেকার। অনেকে চাকরির সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নিতে পারেন না। তাঁদের যদি অনুপ্রাণিত করা যায়, তাহলে আমাদের দেশের অনেক উন্নয়ন হবে। শুধু ছেলেরা নয়, অনেক মেয়েও আমার সঙ্গে ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলতে চান। অনেক মেয়ে জানতে চান যে সন্তানকে সময় দিয়ে কীভাবে আমি অফিস করি?
এনটিভি অনলাইন : পেশা নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত অভিমত কী?
মিথিলা : ক্যারিয়ার জীবনের একটা অংশ। একটা সুন্দর জীবনের জন্য মানুষ ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে। ক্যারিয়ার এমন হওয়া উচিত, যেটাতে ভালোলাগা কাজ করবে। প্রেরণা থাকলে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়। তবে সেটা মনের ভেতর থেকে জাগ্রত হতে হবে। কাজে অনেক বাধা আসবে। পৃথিবীতে কোনো কাজ অসম্ভব নয়। সব সম্ভব। কিন্তু কাজ করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে সব বাধা আস্তে আস্তে অতিক্রম করা যায়।
একবার পড়াশোনায় খারাপ ফল করলে, প্রেমে কিংবা ক্যারিয়ার গড়তে ব্যর্থ হলে অনেকে বিষণ্ণতায় ভোগেন। আমার মনে হয়, একবার পরীক্ষায় কিংবা যেকোনো কাজে ব্যর্থ হলে সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। বিষণ্ণতা কাটিয়ে তুলতে হবে। গালে হাত দিয়ে বসে থাকলে চলবে না।
এনটিভি অনলাইন : আপনি একই সঙ্গে এত কাজ কীভাবে করেন?
মিথিলা : সময় ভাগ করে আমি কাজ করে থাকি। আপনি বলতে পারেন, আমার সময়জ্ঞান খুব ভালো। ছয় ঘণ্টা আমি ঘুমাই। আমার অফিসের নির্দিষ্ট একটা সময় আছে। আমার বাচ্চার জন্য আলাদা সময় আমি রাখি। ছুটির দিনগুলোতে আমি সাধারণত শুটিং করি। বেশি রাত পর্যন্ত শুটিং করি না। আমি কঠোর পরিশ্রমী। আমার কাজ করতে ভালো লাগে। এটা আমার দোষ কিংবা গুণ কি না জানি না। তবে নিজের কাজে আমি কখনো চাপ নিই না।
এনটিভি অনলাইন : বর্তমানে বিশেষ দিবসের জন্য একক নাটকে আপনি অভিনয় করছেন। চলচ্চিত্রে কাজ করার কথা কি আপনি ভাবছেন?
মিথিলা : চলচ্চিত্রে অভিনয় করার ব্যাপারে আমি এখনো আগের সিদ্ধান্তেই আছি। পছন্দ অনুযায়ী গল্প ও ভালো পরিচালক এবং সবকিছু ব্যাটে-বলে মিলে গেলেই চলচ্চিত্রে অভিনয় করব। এ ছাড়া ইচ্ছা নেই।