‘রোগী দেখার সময়ও হুমায়ূন স্যারকে মনে পড়ে’
জনপ্রিয় অভিনেতা এজাজুল ইসলাম পেশায় একজন চিকিৎসক। জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের অনুপ্রেরণায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। এর পর থেকে মিডিয়ায় তিনি ডা. এজাজ নামে পরিচিত। হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে এনটিভি অনলাইনের কাছে স্মৃতিচারণা করেছেন এজাজুল ইসলাম।
এনটিভি অনলাইন : হুমায়ূন আহমেদকে কখন বেশি মনে পড়ে?
এজাজুল ইসলাম : হুমায়ূন স্যারকে প্রতিদিন মনে পড়ে। প্রতিটা কাজের মধ্যে তাঁকে আমি অনুভব করি। স্যারের পরিচালনায় যেসব নাটক ও চলচ্চিত্রে আমি অভিনয় করেছি, সেগুলো এখন পর্যন্ত আমার জীবনের সেরা কাজ। কীভাবে অভিনয় করতে হয়, সংলাপ বলতে হয়, এটা স্যারের কাছ থেকে আমি শিখেছি। এমনকি রোগী দেখার সময়ও হুমায়ূন স্যারকে আমার মনে পড়ে।
এনটিভি অনলাইন : রোগী দেখার সময় স্যারকে মনে পড়ার পেছনে কি কোনো কারণ আছে?
এজাজুল ইসলাম : আমি তো আসলে স্যারের ছাত্র ছিলাম। প্রতিদিন স্যারের কাছ থেকে নতুন নতুন জিনিস শিখতাম। একদিন সকালে স্যার আমাকে তাঁর বাসায় ডেকে বলেছিলেন যে তিনি একটা স্বপ্ন দেখেছেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার, আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমার বাসার সামনে অনেক মহিলা বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। স্বপ্ন দেখার পর মনে হলো, মহিলাদের বাচ্চারা অনেক অসুস্থ। চলো আমরা নেত্রকোনায় আমার শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে একটা মেডিকেল ক্যাম্প করি।’ স্যারের কথা শুনে আমিও রাজি হয়ে যাই।
এনটিভি অনলাইন : মেডিকেল ক্যাম্প করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
এজাজুল ইসলাম : আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগী দেখেছি। অনেক যত্ন নিয়ে রোগী দেখেছিলাম। রোগীদের স্যার বিনামূল্যে ওষুধ দিয়েছিলেন। স্যার আমাকে বলেছিলেন, ‘ডাক্তার, আমি চাই তুমি এখানে নিয়মিত আসো। স্কুলের একটা ঘর তোমার জন্য গুছিয়ে রাখা হবে।’ এরপর স্যার বেঁচে থাকা অবস্থায় প্রত্যেক বছর সেখানে মেডিকেল ক্যাম্প করতাম আমরা। স্যার চলে যাওয়ার পর সেখানে আমার আর যাওয়া হয়নি। কেন হয়নি এটা এখন বলতে চাই না।
এনটিভি অনলাইন : হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?
এজাজুল ইসলাম : আমাদের দেশে লোক দেখানোর জন্য অনেকে অনেক কাজ করেন। আমি তা করতে চাই না। আমি কাজ করলে মন থেকে করব। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক মানের একটা ক্যানসার হাসপাতাল হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। স্যারের সেই স্বপ্ন পূরণ করার চেষ্টা করব আমি। পাঁচ বছর ধরে এটা ভাবছি। কখনো সুযোগ হলে স্যারের স্বপ্নের হাসপাতাল নির্মাণের শুরুটা আমি করতে চাই। আমার উদ্দেশ্য সৎ। এখন দেখা যাক, চেষ্টার ফল কী হয়! আশা করছি, এই কাজে সবার সহযোগিতা পাব।