ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, মানুষের বিনাশ হয় কিন্তু বিনাশ হয় না চেতনার। এই চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, যুগ থেকে যুগান্তরে বিরাজমান থেকে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার ও মুক্তচিন্তার বিকাশের লক্ষ্যে মানুষকে দীক্ষা দিয়ে যায়।  

আজ বৃহস্পতিবার ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপাচার্য এ কথা বলেন। বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাবি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। 

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, পরাজয় নিশ্চিত জেনে আলবদর ও আল শামস বাহিনীর মাধ্যমে পাকিস্তানিরা দেশে দুইভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। প্রথমত চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী (কনভেনশনাল ওয়ে) এবং দ্বিতীয়টি বুদ্ধিজীবী হত্যা (টার্গেট কিলিং)। আর এই দ্বিতীয়টির মাধ্যমে তারা জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল। 

এই হত্যাকাণ্ডকে নির্মম ও জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড আখ্যায়িত করে আখতারুজ্জামান বলেন, সেই সময় তাদের এই হত্যাযজ্ঞ বর্তমান সময়ের জঙ্গিবাদের নীতিকেও হার মানিয়েছে। আর এই জঙ্গিবাদের ভিত রচিত হয়েছিল ২৫ মার্চের সেই কালরাতের হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে। 

উপাচার্য বলেন, বাঙালি জাতির চেতনা বিকাশে যাঁরা অবদান রেখেছিলেন, বিশেষ করে দেশে উদারনীতি গণতন্ত্র চর্চা, অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তাঁদের তারা হত্যা করেছিল ১৪ ডিসেম্বর। এই জাতির চেতনাকে সমূলে উৎপাটন করার লক্ষ্যে পাকিস্তানিরা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায়। 

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানিরা সর্বপ্রথম এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রমণ করেছিল। এবং বিজয় দিবসের আগমুহূর্তে তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করেছে।’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিভাগের শিক্ষক-কর্মচারী-ছাত্র জীবন দিয়েছে, তাদের ছবি স্ব স্ব বিভাগে রাখারও পরামর্শ দেন উপ-উপাচার্য। 

আলোচনা সভা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এনামুজ্জামান। এ সময় আরো আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম মাকসুদ কামাল ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ প্রমুখ।