ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন কাল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে আওয়ামীপন্থী নীল দল এবং বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দল। নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জিততে চায় এই দুই দল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভবনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ১০ জন। নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে তোফায়েল আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি আগে থেকেই সমাপ্ত হয়েছে। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে।'
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তালিকা অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যাঁরা তালিকাভুক্ত, তাঁরাই ভোট দিতে পারবেন। যাঁরা চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন, তাঁরা ভোট দিতে পারবেন না। তবে সাময়িক বরখাস্ত, এলপিআর, ইমেরিটাস অধ্যাপক, সুপারনিউমারি অধ্যাপকরাও ভোট দিতে পারবেন।
জানতে চাইলে নির্বাচনে নীল দলের সভাপতি প্রার্থী ও শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, 'আমরা নির্বাচনে জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ বছর পূর্তিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক কিছু উপহার দিতে চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে সামনেও আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।'
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম জানান, তাঁদের প্রচারণার কাজ শেষ। শিক্ষকদের কাছ থেকেও ভালো সাড়া পেয়েছেন।
অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম হয়েছে। আশা করছি, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষকরা সাদা দলের প্রার্থীদের ভোট দেবেন।’
এদিকে, ২০১৬ সালের কার্যকরী পরিষদে আট প্যানেল এবং ২০১৭ সালে নয় প্যানেলে প্রার্থী দিয়ে নীল দল থেকে বেরিয়ে আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় বাম সমর্থিত গোলাপি দল। কিন্তু ২০১৮ সালের কার্যকরী পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা জমা দেয়নি দলটি।
নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাপি দলের আহ্বায়ক অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, গোলাপি দল বাম ধরনের। যারা মানুষের কথা চিন্তা করে, যাদের মধ্যে মানবতাবোধ জাগ্রত, যারা কোনো লাভের ফায়দা করে না। কিন্তু নীল-সাদা সবাই এ ধরনের কাজে যুক্ত। তাই আমরা এতে অংশগ্রহণ করিনি।’
এম এম আকাশ আরো বলেন, 'আমরা দল হিসেবে কাউকে সমর্থন দেবো না। তবে যারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাদের ভোট দেবো।'
নির্বাচনে নীল দলের প্যানেলে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন
সভাপতি পদে মাকসুদ কামাল; সহসভাপতি উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. ইমদাদুল হক; সাধারণ সম্পাদক অধ্যপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম; যুগ্ম সম্পাদক ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাজিন আজিজ চৌধুরী; কোষাধ্যক্ষ অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
সদস্য গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জিনাত হুদা, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মুহাম্মাদ সামাদ, লেদার অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. আফতাব আলী শেখ, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. জিয়াউর রহমান, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমান, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সৈয়দ মোহাম্মদ শামছুদ্দিন ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর দে।
সাদা দলের প্যানেলে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন
সভাপতি পদে অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম; সহসভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান; যুগ্ম সম্পাদক ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক মো. আসলাম হোসেন; কোষাধ্যক্ষ মার্কেটিং বিভাগ অধ্যাপক এ বি এম শহিদুল ইসলাম।
সদস্য প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইয়ারুল কবীর, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, পালি ও বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার বড়ুয়া, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মাদ জসীম উদ্দিন, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মাদ নাজমুল আহসান, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের মো. ইসরাফিল প্রামাণিক, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলী বিভাগের অধ্যাপক মো. হাসানুজ্জামান।