প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় উসকানি : রাবির দুই শিক্ষকের শাস্তি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় উসকানিমূলক দুটি প্রশ্ন রাখার দায়ে অনুষদের ডিনসহ দুই শিক্ষককে ১০ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৪৭৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষকরা হলেন চারুকলা অনুষদের ডিন ও ‘গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস’ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ‘চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান। এর মধ্যে প্রশ্ন প্রণয়নকারী হিসেবে অভিযুক্ত হওয়ায় মো. জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে আরো একটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী জিল্লুর রহমান যখন ‘সহকারী অধ্যাপক’ থেকে ‘সহযোগী অধ্যাপকে’ উন্নীত হতে আবেদন করতে পারবেন, তখন থেকে আরো পাঁচ বছর পর তাঁকে এই পদের জন্য আবেদন করতে হবে।
রাবির সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আখতার ফারুক ও কে বি এম মাহবুবুর রহমান জানান, গত ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘আই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম কী?’ এবং ‘মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর মায়েনমারের (মিয়ানমার) সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?’ এমন দুটি প্রশ্ন রাখা হয়। যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়।
বিষয়টি তদন্তের জন্য গত ২৮ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে ওই কমিটি সুপারিশসহ সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করে। তার ওপর ভিত্তি করে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়। এ ছাড়া আইনগত বাধা না থাকলে ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। আর চারুকলার প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটির অন্য সদস্যদের সতর্কমূলক চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তাঁরা।
শিক্ষকরা আরো জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইন্টার্নশিপ পেপারে স্বাক্ষর করানো নিয়ে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) অধ্যাপক মোহা. হাছানাত আলীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত আবু নাহিদ মোহাম্মদ হায়দার নামের এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। আবু নাহিদ আইবিএর এমবিএ (দিবা) নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে অধ্যাপক হাছানাত আলীকেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।