‘অনিয়মের শিকার’ ঢাবি শিক্ষক, সংবাদ সম্মেলনে কান্না
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষকদের নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন বিভাগটির সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবু মূসা মো. আরিফ বিল্লাহ। পরে তিনি নিজেই অনিয়মের শিকার হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে করেন।
গতকাল শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন আরিফ বিল্লাহ। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
বিভাগের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করায় তাঁর বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থী দিয়ে প্রথমে কটুক্তি পরে ইভটিজিং করার অভিযোগ আনার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আবু মূসা মো. আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘ঢাবির সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান একটি গবেষণা প্রবন্ধ, অন্যজনের বই নিজের নামে প্রকাশসহ বিভিন্ন জালিয়াতি ধরিয়ে দেই। এ কারণেই ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুস সবুর খান ও বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে এক নারী শিক্ষার্থীর মাধ্যমে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ করান। মূলত ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে ঘৃণিত এই অভিযোগ আনা হয়েছে।’
অধ্যাপক আবু মূসা বলেন, “যখন আমার পদোন্নতির সময় হয় তখনই আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। আমি বিদেশে থাকাকালে আমার একটা আলমারী চেয়ারম্যান কক্ষে ছিল। যেখানে কিছু দূষ্প্রাপ্য বই ও ব্যাক্তিগত ডকুমেন্ট ছিলে। আমি বিদেশ থেকে এসে দেখি সেই আলমারী নেই। ২০১৬ সালে সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খানের কাছে আলমারি ফেরত চাই। তিনি আমাকে বলেন, ‘আলমারী আমার বাসায় আছে, দিয়ে দেব।’ কিন্তু এতদিন না দেওয়ায় আমি আলমারী ফেরত চেয়ে গত ৯ অক্টোবর উপাচার্য বরাবর আবেদন করি। কিন্তু এর পরদিন হঠাৎ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় আমি কটুক্তি করেছে। যা আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি। আবার কাউকে না জানিয়ে গত ১১ অক্টোবর জরুরি অ্যাকাডেমিক বৈঠকের চিঠি আসে যে, ১২ অক্টোবর জরুরি বৈঠক হবে।”
এই অধ্যাপক আরো বলেন, “বৈঠকে চেয়ারম্যান একটা দরখাস্ত সবাইকে পাঠ করে শোনান। যেখানে কটুক্তি করেছে এমন কোনো শব্দ ছিল না। তখন আমি দরখাস্তের একটা কপি চাইলে আমাকে কোনো কপি দেওয়া হবে না বলে জানান। আমি কপি চেয়েছি কারণ, পরে এই দরখাস্ত না জানি আবার পাল্টে দেওয়া হয়। আমাকে কপি দেওয়া হয় না। এই সময় বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই দরখাস্তে মেয়ে তো শাস্তির জন্য আবেদন করেন নি।’ এ সময় পেছনে বসা সাবেক প্রক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। নীচ থেকে দুই নাম্বার লাইনে বাম পাশে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে।’ এই সময় আমি বললাম, আপনি পেছন থেকে কীভাবে দেখলেন কোথায় শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। এই সময় চেয়ারম্যান বৈঠক মূলতবী করে দেন।”
আবু মূসা বলেন, অ্যাকাডেমিক বৈঠকে বলা হলো, আমি কটুক্তি করেছি। অথচ ইভটিজিংয়ের অভিযোগে এখন ভিসি অফিসে পাঠানো হয়েছে। আমি চক্রান্তের শিকার। আমাকে ফাসানোর জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’