নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের রড!
নিম্নমানের রডের ব্যবহার, ভবন নির্মাণ বিধিমালা না মানাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ময়মনসিংহের কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বহুতল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা বন্ধ করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবীর বিষয়টি জানিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের যোগসাজশ আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানায়, ভবনের নির্মাণকাজে নিম্নমানের রডের ব্যবহার করা হলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলেনি প্রকৌশল বিভাগ।
তবে এ বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপরেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নির্মাণাধীন ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনের আটতলার কাজ চলছে। আটতলার ছাদে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের ননগ্রেড রড, যা ঝুঁকিপূর্ণ। শিডিউল অনুযায়ী বিএসআরএম রড ব্যবহারের কথা ছিল।
হুমায়ুন কবীরের ভাষ্য, মেসার্স ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই ভবনের আটতলার কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এর আগেও নিম্নমানের কাজের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ফকরুদ্দিন আহমেদ কিছুই মানেন না। নিম্নমানের রড ব্যবহারের বিষয়ে প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের বলা হলেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক (অর্থ) নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালে প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কাজের টেন্ডার হয়েছে। ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা জাল ব্যবহার না করার জন্য শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
নিম্নমানের রড ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ভাওয়াল কনস্ট্রাকশনের মালিক ফখরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ৬০ গ্রেডের রড ব্যবহার করার কথা। তাই হচ্ছে। যে রড ব্যবহার করা হচ্ছে তার সক্ষমতা প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, রড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছেও আছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের জন্য দুটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ হবে। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৮ সালের জুন মাসে ১০ তলাবিশিষ্ট ভবন দুটির কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।