হলে পদ পেতে ‘মরিয়া’ ঢাবি ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মীরা
শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন বহিভূত কর্মকাণ্ডের দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মীরা বিভিন্ন হল কমিটিতে পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। যদিও, বহিষ্কৃতরা দলের কোনো কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে না বলে নির্দেশ দেওয়া আছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ।
ঢাবি ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, চাঁদা বাজি, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নারী কেলেঙ্কারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও গাজা সেবনের দায়ে ঢাবির বিভিন্ন হলের অর্ধশত কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কারের পর তাঁদের দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। দলের এমন সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বহিষ্কৃত কর্মীদের ছাত্রলীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঢাবির ১৮টি হলে চলে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড। এগুলোর মধ্যে ছাত্রীদের পাঁচটি ও ছাত্রদের ১৩টি হল রয়েছে। তবে ছাত্রীদের সব ও ছাত্রদের ছয়টি হলে পর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদের বাকি সাতটি হলে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি।
কমিটি না দেওয়া এসব হলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত আছে প্রায় অর্ধশত কর্মী। আগস্টের পর ওই হলগুলোতে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। এসব কমিটিতে স্থান পেতেই দলের সব কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন বহিষ্কৃত কর্মীরা।
ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, দল ভারী করার জন্য হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বহিষ্কৃতদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে আসেন। আবার বহিষ্কৃতদের অনেকেরই হলের নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তারা পদ পাওয়ার আশায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নেন।
গত ২৩ এপ্রিল স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে খাওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগকর্মী ইংরেজি বিভাগের রাসেল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ফারুক, নাহিদ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের রাশেদ ও ইতিহাস বিভাগের জামিলকে বহিষ্কার করা হয়।
একই হলে গত ৬ এপ্রিলের সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলা বিভাগের রাজু আহমেদ, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের রাসেল আহমেদ, সমাজকল্যাণ বিভাগের আপেল মাহমুদ, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সালাউদ্দিন আহমেদ রাজু, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মনজুর ইসলাম রানা ও ইতিহাস বিভাগের সাদ্দাম হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ছাড়া সিট দখলকে কেন্দ্র করে গত ২০ এপ্রিল ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হন স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ছাত্রলীগকর্মী মাসুদ, প্রান্ত, সজীব, শুভ, রিয়াদ, রফিকুল ও সবুজ।
এদিকে রাজধানীর পলাশী এলাকায় মারামারির ঘটনায় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগকর্মী আসাদুজ্জামান আসাদ, কামরুল হাসান, কাওসার, জিহাদ, আবির, সাব্বির ও কামাল উদ্দিন রানাকে বহিষ্কার করা হয়।
একই ঘটনায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্রলীগের উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ইসতিয়াক হোসেন তুষার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শহীদুর রহমান শান্তকেও বহিষ্কার করা হয়।
এসব বহিষ্কৃত কর্মীদের দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, দল থেকে বহিষ্কার করা হলে তাঁরা দলের কোন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
বহিষ্কৃতরা কোন পদে আসতে পারবে কিনা জানতে চাইলে আবিদ বলেন, যাঁরা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত হয়, তাঁরা কখনো পদে আসতে পারে না। বহিষ্কৃতদের দলে পদ দেওয়া হয় না।