বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে তিনদিন ধরে কুবি শিক্ষকের অবস্থান
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তা তদন্তের দাবিতে তিনদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে পাঠানো প্রশাসনের ‘হয়রানিমূলক’ চিঠিও প্রত্যাহার দাবি করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান করেন মো. আসাদুজ্জামান। তাঁর অবস্থানের সময়ই আজ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুবিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে দুর্নীতি, দায়সারাভাবে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তথ্য-প্রমাণাদিসহ লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করতে সাত কার্যদিবস সময় বেঁধে দিয়ে গত ৯ জুলাই তাঁকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে, ওই ভাস্কর্যের অনিয়ম তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাঁর কাছে পাঠানো চিঠি প্রত্যাহারের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে গত বৃহস্পতিবার ও রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। রোববার তাঁর অবস্থানের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। আজ তৃতীয় দিনের মতো তিনি সেখানে অবস্থান করেন। তাঁর ওই দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে কুবি শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ।
এদিকে শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানের অবস্থানের মধ্যেই আজ ওই ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ। তবে ওই শিক্ষক তাঁর দাবিতে অবস্থান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমার অবস্থান অব্যাহত থাকবে। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। আমাকে হয়রানি করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ‘ভাস্কর্য নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। আমি সেই পরিপ্রেক্ষিতেই স্ট্যাটাস দিয়েছি। তার তদন্ত করতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘তিনি এসব করে পার পাবেন না। তাঁর কাছে প্রমাণ থাকলে দেবেন।’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে সংকুচিত জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ভাস্কর্যটি সেখান থেকে সরিয়ে নতুন জায়গায় স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ সেখানেই ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়।