ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনে কমিশন গঠনের আহ্বান ঢাবি উপাচার্যের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যারহস্য ও ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটনে উচ্চপর্যায়ের কমিশন গঠনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
আজ মঙ্গলবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপাচার্য এ আহ্বান জানান।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল। এ ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত তথ্য জাতীয় ইতিহাসে সন্নিবেশিত হওয়া প্রয়োজন। এ হত্যারহস্যের উদ্ঘাটন এখন সময়ের দাবি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টকে অভিশপ্ত দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এ দিনে বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা হয়নি। এর আগেই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে তাঁকে শাহাদাতবরণ করতে হয়।
উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। সৎ, উদার, দেশপ্রেমিক, সাহসী ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মহান নেতা ছিলেন তিনি। মানুষকে তিনি অত্যন্ত ভালোবাসতেন। সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের সংগ্রামে তিনি মৃত্যু, জেল, জুলুমকে কখনো ভয় পাননি। আমাদের গর্ব, এ ধরনের নেতা আমরা পেয়েছিলাম।’
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঢাবির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৬ মার্চ তিনি ছাত্রত্ব হারান। বঙ্গবন্ধু পরবর্তীকালে জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ২৪ বছর সংগ্রাম করে আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দেন। আজীবন তিনি আভিজাত্য নিয়ে রাজনীতি করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের সামনেও তিনি অবিচল ছিলেন। এই আভিজাত্য নিয়েই তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন।
উপাচার্য বলেন, ১৫ আগস্টকে শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ আলী আকবর, সাবেক উপরেজিস্ট্রার এ কে এম আমির হোসেন মিয়া বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল- সকল ভবন ও হলে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা প্রভৃতি। উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং চারুকলা অনুষদ আয়োজিত শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।