প্রশ্ন ফাঁসের দায়ে পদাবনতি, ইনক্রিমেন্ট বাতিল
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রশ্ন ফাঁসের দায়ে এক শিক্ষকের পদাবনতি এবং বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় আরো তিনজনকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট। এ ছাড়া আরো চারজনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীর বাসভবনে ২৩৫তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তার বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছে। প্রতিটি তদন্তের বিচার হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসন কোনো অপরাধীদের ছাড় দেয়নি, দেবেও না। এরই ধারাবাহিকতায় সিন্ডিকেট কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’
সিন্ডিকেট সভা শেষে বেশ কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য সাংবাদিকদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ‘এফ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার ঘটনায় গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল ইসলামকে তাঁর স্বীয় পদ থেকে প্রভাষক পদে পদাবনতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী পাঁচ বছর ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হবে। একই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখার সহায়ক কর্মচারী সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ কর্মচারী আলাল উদ্দিনের পাঁচটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী দুই বছর তারা কোনো পদোন্নতি পাবেন না। অপরদিকে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় টেলিফোন অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তৈমুর রেজা তুহিনের পদাবনতি করে সেকশন অফিসার করা হয়েছে। তুহিন চাকরি জীবনে কোনো পদোন্নতি ও ইনক্রিমেন্ট পাবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজকের সিন্ডিকেট।
যৌন কেলেঙ্কারি ও অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমীনের শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কর্মকর্তা ওলিদ হাসান মুকুটকে শোকজ করা হয়েছে। তাঁদের কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে বিচার করা হবে না এই মর্মে আগামী সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হবে।
এ ছাড়া সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি হলের নাম সংযোজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, শেখ হাসিনা হলে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।