ঢাবিতে অবৈধ পার্কিং, দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহানা আক্তার। নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতে হেঁটে কলা ভবনে আসতে হয় তাঁকে। সম্প্রতি ক্লাসে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন এ ছাত্রী। টিএসসির সড়ক দ্বীপের পাশ থেকে গ্রন্থাগারের ফটকের দিকে রাস্তা পার হওয়ার সময় চলন্ত রিকশার ধাক্কায় পড়ে যান তিনি।
শুধু ফারহানা আক্তারই নন, প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। অবাধে যানবাহন চলাচল ও ব্যস্ততম সড়কের দুই পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং করার ফলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
রোকেয়া হলের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের হলের গেট ও আশপাশে সবসময় অন্তত শখানেক রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। টিএসসির দিকে তো প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি আর সিএনজি অটেরিকশার জন্য হাঁটাই যায় না। প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মতো যানবাহনগুলো খুবই দ্রুতগতিতে চলাচল করে। সব মিলিয়ে বিশৃঙ্খল একটি পরিবেশ। রাস্তা পার হতে গেলে মনে হয় সিগন্যালে পড়ে আছি। গাড়ি চলাচলের মধ্যেই অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রধান গেইট থেকে স্বোপার্জিত চত্বর ও রাজু ভাস্কর্যের এ সড়কগুলোতে এলোপাতাড়ি করে থামিয়ে রাখা হয়েছে শতাধিক যানবাহন। এর বেশির ভাগই প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি, অটোরিকশা ও রিকশা। আবার কিছু জায়গাতে বিভিন্ন ধরনের খাবারের গাড়ি। পার্কিং করা, গাড়ির কারণে রাস্তার পরিধি সংকুচিত হয়। এর ফলে রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ, নীলক্ষেত ও চাঁনখারপুল রোডসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানবাহন ও রিকশার দীর্ঘ জট লেগে থাকে। দিনের পর দিন এমন অনিয়ম চলছে। এ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা বিধানে প্রক্টরিয়াল টিম রয়েছে। কিন্তু অবৈধ পার্কিং কিংবা অবাধ যান চলাচল বন্ধে তাদের কখনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।
ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস ও ভারী পরিবহন চলাচল বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাবি শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ফেসবুক পেজ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘বুয়েট ক্যাম্পাসের মধ্যে ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ঢাবির মধ্যে এর কোনো নিষেধ নেই।’
এমন যানজট ও গাড়ি পার্কিংয়ের কথা স্বীকার করে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এ এম আমজাদ বলেন, এমন সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমরা দ্রুতই পদক্ষেপ নেব।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।