ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জবি শিক্ষক বরখাস্ত
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আজ সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফরাজুর রহমান স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে, ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে সোমবার সন্ধ্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। তাঁর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, এর আগে গত বুধবার ক্লাসে না আসার কারণে অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীকে ফোন করে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ক্লাসের জন্য বিভাগে আসতে বলেন। ওই ছাত্রী বিভাগে পৌঁছানোর পর দেখেন, ক্লাস শেষ হয়ে গেছে। এ সময় ওই ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করেন। তখন ওই শিক্ষক তাঁকে ক্লাসে উপস্থিতি কম থাকার কথা বলে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না বলে ভয় দেখান। এরপর ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে একটা দরখাস্ত লিখতে বলেন। তিনি পরীক্ষা দিতে সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলেন। এ ছাড়া তিনি ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন উপদেশ দেন। পরে ওই ছাত্রীকে চতুর্থ তলায় বিভাগের শ্রেণিকক্ষে বসতে বলেন। সেখানে জোরপূর্বক ছাত্রীকে শারীরিকভাবে নিপীড়ন করেন ওই শিক্ষক। একপর্যায়ে শিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন ওই ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানান, এ ঘটনার কথা কাউকে না জানাতে অনুরোধ করেন ওই শিক্ষক। এ জন্য তিনি ওই ছাত্রীর পিছু পিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক পর্যন্ত আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে সেই দৃশ্য পাওয়া যাবে বলে দাবি করেছেন ওই ছাত্রী।
এদিকে, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হেলেনা ফেরদৌসীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।