আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই : বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংকের বিবেচনায় মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে নিম্ন আয়ের পর্যায় থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ আগের মতোই সহজ শর্তে ঋণ পাবে বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন। তবে তিনি বলেন, আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরিতে উন্নীত হতে হলে শুধু আয়ের ভিত্তিতে হবে না। কারণ তিনটি সূচকের ভিত্তিতে এটা নির্ধারণ করা হয়।
গড় মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে বিশ্বব্যাংক। একটি হচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ, অন্যটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হবে।
প্রতিবছর ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় অনুসারে দেশগুলোকে চারটি আয় গ্রুপে ভাগ করে। যাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় এক হাজার ৪৫ ডলার বা তার নিচে, তাদের বলা হয় নিম্ন-আয়ের দেশ। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এ তালিকাতেই ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় এক হাজার ৩১৪ ডলার। তবে বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা অনুযায়ী তা এখন এক হাজার ৪৫ ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের লিড ইকোনমিস্ট জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের যে জাতীয় একট আকাঙ্ক্ষা আছে যে আমরা একটি কমফোর্টেবল মধ্য আয়ের দেশ হতে চাই। সেই যাত্রা বাংলাদেশ শুরু করেছে। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ সেটার একটা স্বীকৃতি। এই প্রথম আমরা নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের পর্যায়ে প্রবেশ করলাম। সেই প্রবেশের একটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি গতকাল বিশ্বব্যাংক প্রকাশ করেছে। তবে এখানে কোনো আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।’
এ কারণেই নতুন তালিকায় মধ্যম আয়ের দেশ হতে পেরেছে বাংলাদেশ। সরকারের ১০ বছরের প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার কথা বলা আছে। এর আগেই মধ্যম আয়ের দেশ হলো বাংলাদেশ।
জাহিদ হোসেন বলেন, এলডিসি (স্বল্পোন্নত) ক্যাটাগরিতে উন্নীত হতে হলে শুধু আয়ের ভিত্তিতে হবে না। কারণ তিনটি সূচকের ভিত্তিতে এটা নির্ধারণ করা হয়। জিএনআই পার ক্যাপিটা একটি, এবং সেখানে বিশ্বব্যাংক যে তথ্য ব্যবহার করে জাতিসংঘের যাঁরা আছেন এটি নির্ধারণ করেন, তাঁরাও একই তথ্য বা সূচক ব্যবহার করেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে আরো দুটি সূচক যোগ হয়। একটি হচ্ছে মানবসম্পদ (হিউম্যান অ্যাসেট ইনডেক্স), আরেকটি হচ্ছে ভালনারেবিলিটি সূচক।
নতুন তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়া আরো তিনটি দেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের তালিকায় ঢুকতে পেরেছে। এগুলো হচ্ছে কেনিয়া, মিয়ানমার ও তাজিকিস্তান। সার্কভুক্ত ভারত ও পাকিস্তান নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের অন্তর্ভুক্ত। সব মিলিয়ে এখন নিম্ন-আয়ের দেশ ৩১টি, নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ ৫১টি, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ৫৩টি এবং উচ্চ আয়ের দেশ ৮০টি।