‘বিসিক আমাদের ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে’
যারা দেশের পাটশিল্পকে ধ্বংস করেছে, তারাই চামড়াশিল্পকে ধ্বংসের চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন চামড়াশিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর হাজারীবাগে চামড়া শিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে শাহীন আহমেদ এ কথা বলেন।
চামড়াশিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের কো-চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের কাঁচা চামড়া বিদেশে পাচার করার জন্য একটি চক্র কাজ করছে। আর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) যেখানে আমাদের সহযোগিতা করার কথা, সেখানে তারা উল্টো আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলর শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রচেষ্টায় তিলে তিলে তৈরি করা শিল্প এটি। এ শিল্প আমাদের সামনে ধ্বংস হবে, তা আমরা কিছুতে হতে দেব না। প্রয়োজনে আমরা এ শিল্প রক্ষার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করব। এ শিল্প ধ্বংস হলে কারা লাভবান হবে তা আমরা জানি।’
শাহীন আহমেদ বলেন, আগামী ১২ এপ্রিল কালো পতাকা মিছিল হবে। যদি ১৫ দিনের মধ্যে আদালতের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা না হয়, তাহলে বিসিক ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফিনিশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোরটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি বেলাল ভূঁইয়া বলেন, ‘একই দিনে একই সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন কেটে দিতে হবে, এটা কি মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়? এটা যদি মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়, তাহলে আজ মানবতাবাদীরা কোথায়?’
বেলাল ভূঁইয়া আরো বলেন, ‘শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে যাঁরা কথা বলেন, তাঁরা আজ কোথায়? আজ আমাদের শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শ্রমিকরা খেতে পাচ্ছেন না, ঘুমাতে পারছেন না, গোসল করতে পারছেন না।’
এই নেতা বলেন, ‘বিসিকের নিজেদের প্রতিষ্ঠান যেখানে রুগণ, সেখানে আমাদের সাথে কাজ করবে কীভাবে। বিসিক একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠান, যাদের ট্যানারির বিষয়ে কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা নেই।’
সমাবেশে চামড়াশিল্প রক্ষা ঐক্য পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ নয় দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে : ২০০৩ সালের সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী শিল্পনগরীর প্লটের মালিকানা দ্রুত রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে, শিল্পনগরীতে আন্তর্জাতিক মানের ইটিপি, ক্রোম রিকভারি ইউনিট ও ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ নিশ্চিত করতে হবে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে সাভার চামড়াশিল্প নগরীতে গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে, শ্রমিকদের আবাসন, ট্যানারিশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্লট বরাদ্দ দিতে হবে। কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। কারখানার উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় যেসব রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারকে পরিশোধ করতে হবে এবং বিসিকের অব্যবস্থাপনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।
গত শনিবার হাজারীবাগের সব ট্যানারির বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শেষ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। তারা ২২৪টি বিদ্যুৎ-সংযোগ, ৫৪টি গ্যাসের সংযোগ ও ১৯৩টি পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে।