কলেজছাত্রী হত্যাচেষ্টায় বিএমএ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
লক্ষ্মীপুরে ফারহানা আক্তার (৩২) নামের এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) উপপরিচালক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা সভাপতি ডা. আশফাকুর রহমান মামুনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় ৬টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় আহত কলেজছাত্রী ফারহানা আক্তার এ মামলা করেন। মামলায় ডা. মামুন ছাড়া অজ্ঞাত আরো এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
এ দিকে আহত ফারহানা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা জোবেদা খানমের তত্ত্বাবধানের রাখার জন্য জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী আহত ফারহানা আক্তার পাবনা জেলার ভাঙ্গুরা উপজেলার আদাবাড়িয়া গ্রামের আবদুর রহমান খানের মেয়ে এবং লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি পরীক্ষার্থী।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন ও জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা সুলতানা জোবেদা খানম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফারহানা লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের শাখারীপাড়া এলাকায় সবিতা রাণী নামের এক নারীর বাসায় ভাড়ায় থাকেন। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি পরীক্ষা দিচ্ছেন। ইতিপূর্বে তিনি লক্ষ্মীপুরে বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর মা-মনি প্রকল্পের কর্মী ছিলেন।
পরীক্ষা শেষে গতকাল বিকেল সবিতার বাসা থেকে পাবনা যাওয়ার উদ্দেশে বের হন ফারহানা। অপেক্ষা করেও বাস কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে গতকাল রাতে আবার ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথে তিনি দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন।
ফারহানাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় তাঁর চিৎকারে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফারহানা সাংবাদিকদের বলেন, লক্ষ্মীপুরে কর্মরত অবস্থায় লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে সিলেট এলাকার ‘সুরমা ভ্যালি’ নামের রেস্ট হাউজে মামুনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেওয়া নিয়ে মামুনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়।
ফারহানা আরো বলেন, মুঠোফোনে কথাবার্তা ও বিয়েসংক্রান্ত সব কিছু রেকর্ডিং আছে তাঁর কাছে। পরবর্তী সময়ে মুঠোফোনে ডা. মামুন তাঁকে হত্যার হুমকি দেন এবং লক্ষ্মীপুর না আসতে বলেন।
ফারহানার অভিযোগ, পরীক্ষা দিতে লক্ষ্মীপুর আসায় মামুন তাঁকে হত্যার উদ্দেশে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালান।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. আশফাকুর রহমান মামুন।