নরসিংদীতে সেলিম হত্যা, আপেলের স্বীকারোক্তি
নরসিংদী কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি হাজি সেলিম হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন রফিকুল ইসলাম আপেল (২৮)।
গত রোববার দিবাগত রাতে জেলা শহরের পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আপেলকে গ্রেপ্তার করে। আজ মঙ্গলবার তাঁকে নরসিংদীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ওয়ায়েজ আল-করনির আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় তিনি জবানবন্দি দিতে চাইলে বিচারক তাঁর খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আপেল সদর উপজেলার পশ্চিম ব্রাহ্মন্দী এলাকার হোসেন আলীর ছেলে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন চন্দ্র সরকার জানান, রফিকুল ইসলাম আপেল নরসিংদীর কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি হাজি সেলিম হত্যার মূল হোতা। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তিনি সেলিম হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। নরসিংদীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ওয়ায়েজ আল-করনির খাস কামরায় এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এসআই খোকন চন্দ্র সরকার আরো জানান, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ব্রাহ্মন্দীতে বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তরা সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ন্যস্ত করা হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তাঁর পুত্রবধূ রেখা বেগমসহ আরো চারজন। তাঁরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দেন।
জানা গেছে, নিহত হাজি সেলিম মিয়া নরসিংদী জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি ছিলেন। পারিবারিক কলহের কারণে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটে। সেলিম দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘর সংসার করতে থাকেন। দ্বিতীয় সংসারে তাঁর একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এতে প্রথম পক্ষের ছেলেরা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। মানসিক যন্ত্রণায় সেলিমের দ্বিতীয় ছেলে আশরাফ অতিরিক্ত সেডিটিভ ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় আশরাফের স্ত্রী রেখা বেগম শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। খলিল নামে রেখার এক মামাও হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সবশেষে সেলিমের বড় ছেলে ডা. ইফতেখার আলমও বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব মামলায় তাঁকে দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকতে হয়।
হাজি সেলিমও তাঁর প্রথম স্ত্রী ও ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর হত্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তিনি নরসিংদী সদর মডেল থানায় কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ব্রাহ্মন্দীতে বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।