যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ, রাবি ছাত্রী স্থায়ী বহিষ্কার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ আনায় এক ছাত্রীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রশাসন ভবনে অনুষ্ঠিত ৪৬৭তম সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কার হওয়া ছাত্রীর নাম শাপলা সুলতানা সাফিয়া। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা (উর্দু) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মী ওই ছাত্রী রোকেয়া হলে থাকতেন।
সিন্ডিকেট সদস্য ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণ হওয়ায় সিন্ডিকেট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে অভিযোগকারী ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে সিন্ডিকেট থেকে ওই ছাত্রীকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছিল।’
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়েছিলেন শাপলা। ঘটনাটি তদন্ত করতে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিনকে আহ্বায়ক করে তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান ও সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. উজ্জ্বল হোসেনকে সদস্য করা হয়।
কমিটির সদস্যরা ঘটনা তদন্ত করে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬৪তম সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। সেখান থেকে ওই ছাত্রীকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সেই নোটিশের উত্তর পাওয়ার পর রোববারের সিন্ডিকেটে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে ওই ছাত্রী শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলার পর ক্যাম্পাসে লাগাতার কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন ঘেরাও করেছিল ছাত্রলীগ।