সাবেক স্ত্রীকে হত্যা : স্বামীর ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন
বগুড়ার আদমদীঘিতে সাবেক স্ত্রীকে শ্বাসরোধ ও পায়ের রগ কেটে হত্যার দায়ে তালাকপ্রাপ্ত স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
আজ বুধবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম আহমেদ খলিলুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দুই আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
একই মামলায় অপর তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালশন গ্রামের সোহেল ইবনে করিম (৩৫)। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তিনজন হলেন বগুড়া সদর উপজেলার ফুলবাড়ী সরকারপাড়া গ্রামের শাকিল সরকার (২৮), আদমদীঘি উপজেলার সেনগুপ্ত ঘোষ (৩৫) ও দুপচাঁচিয়া উপজেলার বাটাহারা গ্রামের আহাদ আলী (৪০)। এর মধ্যে শাকিল সরকার ও সেনগুপ্ত ঘোষ ছাড়া অন্যরা পলাতক।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সোহেল ও আহাদ আলী এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর আর আত্মসমর্পণ করেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানান, হত্যার শিকার শিরিন আক্তার (২৫) আসামি সোহেল ইবনে করিমের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ছিলেন। এরপরও নানা কারণে সোহেল তাঁকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দিতেন। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিকেলে আসামিরা একটি মাইক্রোবাসে করে আদমদীঘি উপজেলার মুরইল গ্রামে শিরিনের বাবা আজিজার রহমানের বাড়িতে যান। এ সময় বাড়িতে তাঁর বাবা-মা না থাকার সুযোগে আসামিরা শিরিন আক্তারকে জোর করে বাড়ির পেছনে নিয়ে যান। এরপর তাঁরা তাঁকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালান। তাঁর দুই পায়ের রগও কেটে দেওয়া হয়। এতে শিরিন আক্তার মারা গেছেন ভেবে আসামিরা তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় শিরিন আক্তার বাকরুদ্ধ হয়ে যান। পরে ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদমদীঘি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়।
মামলাটি বগুড়া জজ আদালতে চলা অবস্থায় আসামিরা জামিন পান। পরে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বগুড়া থেকে রাজশাহী বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম খোকন।