জলবায়ু তহবিল দিয়ে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র!
জলবায়ু তহবিলের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করছে জাপান! একই অর্থ দিয়ে ভারতেরও একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে দেশটি।
জলবায়ু তহবিল থেকেই দুই দেশের দুটি প্রকল্পে ৬৩ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিরোধিতা সত্ত্বেও জাপান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলার বরাদ্দ দিয়ে অর্থায়ন করছে।
বার্তা সংস্থা এপির ডিসেম্বরের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় জলবায়ু সহায়তার অংশ হিসেবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার দেওয়ার কথা আছে জাপানের। তবে এ সিদ্ধান্ত তীব্র সমালোচনায় পড়েছে। পরিবেশবাদীদের মতে, সৌরচালিত ও বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশে অর্থায়ন করা উচিত ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে আরো বলা হয়, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী প্রকল্পে সহায়তার জন্য গত বছরের জুনে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছে।
বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে ওই প্রকল্পের জন্য ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
মাতারবাড়ী প্রকল্পটি হবে আমদানি করা কয়লানির্ভর। এটি হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানি করা কয়লানির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র। বৃহত্তম কেন্দ্রটি হবে রামপালের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।
কুদগি প্রকল্পে আংশিক সহায়তা করেছে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জেবিআইসি)। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিদ্যুৎ কোম্পানি এনটিপিসিকে ২১ কোটি রুপি সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে।
তবে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কায় স্থানীয় কৃষকরা কুদগি প্রকল্পের বিরোধিতা করেছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষও হয়েছে।
জাপানের যুক্তি, বাংলাদেশ ও ভারতের দুটি প্রকল্প পরিবেশবান্ধব। এ প্রকল্পে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে যা কয়লাকে যথাযথভাবে পুড়াবে। এতে গতানুগতিক প্রকল্পের চেয়ে কার্বন নিঃসরণ কম হবে।
দেশটির কর্মকর্তাদের মতে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর কয়লাবিদ্যুৎ দরকার। এতে তাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। বিদ্যুতে সহজপ্রাপ্যতা বাড়বে।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নারী মুখপাত্র তাকাকো ইতো বলেন, ‘জাপান মনে করছে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাস্তবিক ও কার্যকর চিন্তা।’