তদন্তে চরম অদক্ষতা ও গাফিলতি ছিল
ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘মামলা তদন্তে পুলিশ চরম অদক্ষতা ও গাফিলতি দেখিয়েছে।’
আজ বুধবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৪-এর বিচারক সালেহ উদ্দিন রায় ঘোষণার সময় এ কথা বলেন।
৩০ পৃষ্ঠা রায় পড়ার সময় বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন পুলিশের পরিদর্শক এসএস শাহাদাৎ হোসেন ও মাহবুব-এ-খোদা। বিশেষ করে পরিদর্শক শাহাদাৎ এই মামলার তদন্তে চরম অদক্ষতা ও গাফিলতি দেখিয়েছেন।’
‘পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার এ ধরনের গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা সঠিকভাবে তদন্ত করলে, বিচারপ্রার্থীর অভিযোগ প্রমাণের জন্য তা অধিকতর সহায়ক হতো। তবে, তাঁদের তদন্তের দুর্বলতার কারণে এ মামলার যে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি, তা বলা যায় না।’
বিচারক আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে উপস্থাপিত মৌখিক, দালিলিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।’
২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখা প্রধান লুৎফর রহমান ও অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে অব্যাহতির সুপারিশসহ শুধু পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মাহবুব-এ-খোদা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন।
২০১১ সালের ৫ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা করেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা।
মামলা দায়েরের পরের দিন একই বছরের ৬ জুলাই পরিমলকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে তাঁর স্ত্রীর বড় বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভিকটিমকে প্রলোভন দেখিয়ে ২০১১ সালের ২৮ মে প্রথমে ধর্ষণ করা হয়। এ সময় ওই ছাত্রীর নগ্ন ছবি মোবাইলে ভিডিও আকারে ধারণ করা হয়। পরে একই বছরের ১৭ জুন আবারও ভিকটিমকে ব্ল্যাকমেইল করে ধর্ষণ করা হয়।