আইভী-শামীম ওসমানের দ্বন্দ্ব কাম্য নয়
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব একান্তই ব্যক্তিগত। তবে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য এ ধরনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত কাম্য নয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
আইভী ও শামীম ওসমানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব সরকারের জন্য ইমেজ সংকটের কারণ হবে না বলেও মনে করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে হকার ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সমর্থকদের সঙ্গে মেয়রের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং মেয়র আইভীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তাঁদের এই দ্বন্দ্ব একান্তই ব্যক্তিগত। আইভি চেয়েছেন হকারদের উচ্ছেদ করে রাস্তা পরিষ্কার রাখতে। আরেকজন চেয়েছেন হকারদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি। বিকল্প কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত তিনি হকারদের রাখতে চেয়েছেন বলে আমার ধারণা।’
এখন এই ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন। তাঁরা হয়তো এই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেবেন। অথবা দুজনের (আইভী ও শামীম ওসমান) মধ্যে সমঝোতা করার জন্য কাউকে দায়িত্ব দেবেন। তবে এই দ্বন্দ্ব সাময়িক। এগুলো থাকবে না।’
শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য এ ধরনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত কাম্য নয় বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
গতকাল বিকেল ৪টার দিকে মেয়র আইভী নারায়ণগঞ্জ নগর ভবন থেকে বের হয়ে নগরীর বঙ্গবন্ধু রোডের ফুটপাত দিকে হাঁটতে শুরু করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বেশ কিছু সমর্থক ছিলেন। পুলিশও তাঁদের সঙ্গে থাকে। একপর্যায়ে আইভীর সমর্থকরা ফুটপাতে হকারদের বসতে নিষেধ করলে প্রথমে হকাররা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। তখন হকারদের সঙ্গে আইভীর সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। চাষাঢ়া এলাকায় শামীম ওসমানের সমর্থকরা হকারদের সঙ্গে যোগ দেয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে হকার ও শামীম ওসমান সমর্থকদের হামলার মুখে মেয়র আইভী বঙ্গবন্ধু সড়কে অনড় অবস্থান করেন। এ সময় তারা মেয়র আইভীর ওপর হামলা চালালে সমর্থকরা মানবদেয়াল তৈরি করে তাঁকে ঢেকে রাখেন। এ সময় তাদের ছোড়া ঢিলে মেয়র আইভী আহত হন।
পরে হকারদের সমর্থনে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান রাজপথে নেমে আসেন। তিনি হকারদের পক্ষ নিয়ে বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থান করেন। এ সময় আহত আইভী নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে অবস্থান নেন। পুলিশ প্রায় ৩০০ ফাঁকা গুলি ও বেশ কিছু কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।