কোনোমতেই পাক-ভারত যুদ্ধ ছিল না, ভারতীয় যোদ্ধাদের মন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে রক্ত দিয়েছে।
আজ শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত ‘ইন্টারঅ্যাকশন উইথ ইন্ডিয়ান ওয়ার ভেটেরান্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মিত্রবাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একসঙ্গে লড়েছে, রক্ত দিয়েছে এবং জীবন বিসর্জন দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রেজেন্টশন যেটা হয়েছে সেখানে মনে হয় যে, কথার ইটা এমন ছিল যে, এটা পাক-ভারত যুদ্ধ। আমরা কখনোই এটা স্বীকার করি না। কোনোমতেই এটা পাক-ভারত যুদ্ধ নয়। এটা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধ, এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধ যৌথ নেতৃত্বে হয়েছিল। মানে, আমাদের বাংলাদেশ সরকার এবং ভারত সরকার—বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ভারত সেনাবাহিনী যৌথভাবে চুক্তি করে এ যুদ্ধ করেছিল।’
ভারতের মেজর জেনারেল এইচ এস ক্লের লিখিত ‘ঢাকায় ১২ দিন’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। লেখকের ছেলে আইএফএফের উইং কমান্ডার (অব.) দীজয় ক্লের বইটি সম্পাদনা করেন।
অনুষ্ঠানে বইটির বাংলা ও ইংরেজি উভয় সংস্করণেই মোড়ক উন্মোচন করা হয়। তবে ভারতে মোড়ক উন্মোচনের পর ইংরেজি সংস্করণ আগেই বাংলাদেশের বাজারে এসেছে।
দীজয় ক্লের স্ত্রী-পুত্র ও নাতি-নাতনিসহ অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করেন।
ব্রিগেডিয়ার এইচ এস ক্লে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৯৫ মাউন্টেন ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। দীজয় সেই সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) ফ্লাইং অফিসার ছিলেন। তিনিও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এইচএস ক্লের ২০১৬ সালে মারা যান।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার ড. আদর্শ স্বাইকা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ১০ ভারতীয় সৈন্য এবং বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণা করেন।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা ভারতের জনগণ, সরকার এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছে ঋণী। তারা পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের আশ্রয়, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছিলেন এবং উৎসাহ জুগিয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি জনগণের অধিকারের পক্ষে প্রচারণা চালাতে বিপুল সহায়তা দিয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামও অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাঁর স্মৃতিচারণা করেন।