মেছোবাঘ দেখতে লোকজনের ভিড়
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের কয়েকজন তরুণ একটি মেছোবাঘ আটক করেছে। আর সেটি দেখতে দিনভর সব বয়সী মানুষের ঢল নামে।
যুবকরা বলছেন, এটি বাঘের ছানা। এখন তারা এটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দিতে চায়।
বর্তমান সেই প্রাণিটি ভৈরব পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া কিশোর সমিতি নামের একটি সামাজিক সংগঠনের কক্ষে শিকলবন্দি অবস্থায় আছে।
তবে ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, আটক প্রাণিটি বাঘ নয়। এটি মেছো বিড়াল বা মেছোবাঘ ইংরেজিতে যাকে ফিসিং ক্যাট বলা হয়। এদের বসবাস হাওরাঞ্চলে। যেহেতু ভৈরব হাওরাঞ্চল বা ভাটি এলাকা, তাই এর বসবাস স্বাভাবিক। যেকোনো কারণে সে লোকালয়ে এসে পড়েছে।
প্রাণিটি আটক করা তরুণ রিপন, আপেল ও সালাম জানান, গতকাল বুধবার তাঁদের এক বন্ধুর জন্মদিনের উৎসব ছিল। তারা সেই অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ একটি প্রাণি রাস্তায় উঠে আসে এবং চলন্ত অটোরিকশায় ধাক্কা লেগে তাদের সামনে এসে পড়ে। তারা সেটিকে বাঘ মনে করে ভয় পেয়ে পিছিয়ে যান। এরপর প্রাণিটি দৌড়ে একটি বাড়ির গলিতে ঢুকে আটকা পড়ে। পরে তারা সেটি শেকল দিয়ে বেঁধে তাদের কিশোর সমিতির একটি রুমে আটকে রাখে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া কিশোর সমিতির সামনে মেছোবাঘ দেখতে লোকজনের ভিড়। ছবি : এনটিভি
এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রামসহ আশেপাশের এলাকার নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোরদের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়। প্রাণিটিকে এক নজর দেখতে ভিড় জমায় ওই সংগঠনের সামনে। প্রাণিটির দায়িত্বে থাকা তরুণরা জানায়, প্রাণিটিকে তারা চিড়িয়াখানায় দিতে চায়।
ভৈরব উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলামের কাছে খবর পেয়ে তিনি আজ সকালে সেটি দেখে এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলরুবা আহমেদকে অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও দিলরুবা আহমেদ জানান, আটক বন্যপ্রাণিটি কিশোরগঞ্জ জেলা বনবিভাগে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ বনবিভাগের মাধ্যমে দেশের কোনো একটি সাফারি পার্ক অথবা চিড়িয়াখানায় দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও প্রাণিটিকে আটকের পর না মেরে প্রশাসনকে জানানোর জন্য ওই এলাকার তরুণ সমাজকে ধন্যবাদ জানান।