মুন্সীগঞ্জে প্রশ্ন ফাঁস, ৯ জনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলায় ১১৯টি বিদ্যালয়ের প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার নয়জনের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
এদিকে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনাটি অধিক গুরুত্ব ও তদন্তের স্বার্থে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে।
সদর উপজেলায় প্রশ্ন ফাঁসের কারণে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর সব বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করে ১৭ ডিসেম্বর নতুন প্রশ্নপত্রে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এর আগে গত মঙ্গলবার প্রথম দিন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নয়জনকে এবং দ্বিতীয় দিন বুধবার রাতব্যাপী অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (সংশোধনী ২০০৯) ৬৩ ধারায় মামলা [২৩-(১২)-১৭] করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—সরকারি হরগঙ্গা কলেজের শিক্ষার্থী মো. কাজিম (২২), রফিকুল ইসলাম (২০), রতন মিয়া (২৪), আবদুর রহিম (২১), মো. কামরুল হাসান (২৫), মোস্তাফিজুর রহমান (২২), রিয়াজ মিয়া (২০), সাখাওয়াত হোসেন (২৫) ও জাকির হোসেন (২৫)।
এ ছাড়া আটক আরো পাঁচজন হলেন বছিরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ফারিয়া সুলতানা সোনিয়া (২৯), হরগঙ্গা কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু (২৬) ও কাকলি (২৮), হরগঙ্গা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন (৩০) ও আরিফের স্ত্রী সম্পা আক্তার (২২)।
পুলিশ সূত্র জানায়, এ ঘটনার অন্যতম হোতা লিজা আক্তারসহ আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, এসব মামলা অধিক গুরুত্ব বহন করায় এবং মামলার বৃহত্তর তদন্তের স্বার্থে গোয়েন্দা শাখায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকাতেও এ ধরনের মামলাগুলো গোয়েন্দা শাখা ও সিআইডি তদন্ত করে থাকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার হওয়া নয়জনকে আজ দুপুরে মুন্সীগঞ্জে জেলা দায়রা ও জজ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আমলি আদালত-১-এর বিচারক হায়দার আলী দুদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বুধবার আটক পাঁচজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশের আদালত পরিদর্শক হেদায়াতুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, দুপুরে গ্রেপ্তার নয়জন শিক্ষার্থীকে দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আমলি আদালত-১-এর বিচারক হায়দার আলী এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা জানান, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এরই মধ্যে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জড়িতদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান তিনি।