এইডসে আক্রান্ত রোহিঙ্গারা, ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও গণহত্যার মুখে গত ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় হয়েছে তাদের। সহায়-সম্বলহীন রোহিঙ্গাদের অনেকের শরীরে মিলেছে এইচআইভির সংক্রমণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের থেকে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে কক্সবাজারের বাসিন্দাদের মধ্যে।
কক্সবাজারের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র ‘নোঙ্গর’-এর তথ্যমতে, নতুন-পুরোনো মিলে ১৪১ জন রোহিঙ্গার শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে এসেছে ৯৭ জন। আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া কক্সবাজারে স্থানীয়দের ১১৫ জনের মধ্যে এইডস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েছে টেকনাফ ও উখিয়াসহ পুরো কক্সবাজারের মানুষ।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ও এইচআইভি ইউনিটের ইনচার্জ ডা. শাহীন আবদুর রহমান জানান, আবাসিক ২৫ আগস্টের পর থেকে ৯৭ জন এইচআইভি সংক্রমিত রোহিঙ্গা পাওয়া গেছে। তাদের বেশির ভাগই নিজেদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানত। মিয়ানমারে তারা চিকিৎসাধীন ছিল। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর তারা এইডস আক্রান্তের কথা জানায়। এখানেও তাদের চিকিৎসা চলছে।
ডা. শাহীন আরো জানান, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাসহ (আইওএম) কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাই মূলত এইডস আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পাঠায়। তাদের ও ইউএনএইডের তথ্যমতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে দশমিক ৮ শতাংশ এইডস আক্রান্ত। এই হিসাব অনুযায়ী শরণার্থী শিবিরগুলোতে পাঁচ হাজারের বেশি এইডস আক্রান্ত রোহিঙ্গা রয়েছে।
চিকিৎসক আরো বলেন, আক্রান্ত রোহিঙ্গারা যেন অসামাজিক ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এদিকে, ৯৭ জনের আক্রান্ত রোহিঙ্গার মধ্যে ৩৩ পুরুষ, ৪৯ নারী, ১৫ শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এইডস ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মিয়ানমার। দেশটিতে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখের ওপর এবং প্রতি হাজারে আটজনই এইচআইভি পজিটিভ। তবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই সংক্রমণের পরিমাণ কম।