‘দুই জায়গায় বাংলাদেশকে দৃঢ়তা দেখাতে হবে’
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার রূপরেখা সইকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, আন্তর্জাতিক চাপে পড়েই মিয়ানমার এ ইস্যুতে নমনীয় হয়েছে। আর তাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক দুই দিক থেকেই বাংলাদেশকে দৃঢ় অবস্থানে থাকতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সই হয় রোহিঙ্গাদের ফিরে নেওয়ার লক্ষ্যে রূপরেখা ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেসড পারসনস অব রাখাইন স্টেট’। আশা করা হচ্ছে এর ফলে আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
রূপরেখা সইয়ের বিশদ জানাতে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, এক বিবৃতিতে মিয়ানমার জানায়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের রূপরেখা সই ১৯৯২-৯৩ প্রত্যাবাসন চুক্তির ভিত্তিতেই হয়েছে। এ ছাড়া দাবি করা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুটি মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়। বন্ধুত্ব ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের মাধ্যমেই চলমান পরিস্থিতির উত্তরণ হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টা এখন আর দ্বিপক্ষীয় নেই। তিনি বলেন, ‘আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সেক্রেটারি অব স্টেট রেক্স টিলারসন স্পষ্ট করে বলেছেন যে, ওখানে একটা এথনিক ক্লিনজিং (জাতিগত নিধন) হয়েছে। তাই যদি হয়ে থাকে এবং সেটা যেহেতু আমেরিকা বলেছে তাহলে এই বিষয়টা আর দ্বিপক্ষীয় থাকল না। এটা এমনিতেই একটা আন্তর্জাতিক বিষয় হয়ে গেল। তো সেই জায়গায় ফেরত যাবে কখন, আমার প্রসেসে—এটা আর মিয়ানমারের একার বিষয় রইল না।’
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শেষ করতে সময় লাগবে জানিয়ে শেষ পর্যন্ত চাপ অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন এ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক।
ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমি একা বলছি না যে এটা এথনিক ক্লিনজিং বা ছোটখাটো দেশও বলছে না। এমন কতগুলো দেশ বলছে যারা ইমপোর্ট্যান্ট প্লেয়ার্স।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে সেটা হলো চীনের অংশগ্রহণটা। মানে যেখানে একসময় চীন আমাদের সাথে বলতে গেলে ছিল না। ভোটে বিরোধিতা করেছে। কিন্তু সেই চীনই আবার অ্যাট লিস্ট রূপরেখাও দিয়ে দিচ্ছে যে কীভাবে সমাধান করা যায়।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবং দ্বিপক্ষীয়—এই জায়গায় যদি আমি আমার ফার্মনেসটা বাড়াতে পারি মিয়ানমারও বুঝবে যে হ্যাঁ এবার সমাধানটা করতেই হবে।’