বাড়িতে হত্যার পর স্বামীর লাশ নিয়ে যান রেলস্টেশনে
গাজীপুরে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতের এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের নাম বুলবুল আলম (২৫)। তিনি দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌর শহরের হুমায়ুন কবীরের ছেলে। আটক দুজন হলেন বুলবুলের স্ত্রী পার্বতীপুর উপজেলার দেওয়ালিয়াপাড়া গ্রামের জয়নব আক্তার (২৪) ও তাঁর কথিত প্রেমিক পাবনার চাটমোহর উপজেলার দুলাউড়া গ্রামের আসাদুল ইসলাম (২৫)। তাঁরা সবাই পোশাক কারখানার কর্মী।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম মোগড়খাল এলাকায় মোহর উদ্দিনের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন বুলবুল। তাঁরা দুজনই স্থানীয় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। কারখানায় কাজের সুবাদে জয়নব আক্তারের সঙ্গে তাঁর সহকর্মী আসাদুল ইসলামের পরিচয় হয়। একসময় তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এই সম্পর্ক জানার পর বাদ সাধেন জয়নবের স্বামী বুলবুল আলম। তিনি জয়নবকে আসাদুলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে বলেন।
এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। এর জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিজ বাসায় গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে বুলবুলকে হত্যা করেন জয়নব ও তাঁর প্রেমিক আসাদ। পরে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য লাশটি গাজীপুর রেল জংশন স্টেশন এলাকায় নিয়ে যান। এ সময় স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে অসুস্থ স্বামীকে দিনাজপুর নিয়ে যাচ্ছেন বলে জয়নব জানান।
বিষয়টি আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশ বুলবুলকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের গলায় কালো দাগ থেকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হলে পুলিশ তাঁর স্ত্রী জয়নবকে আটক করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জয়নব হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ জয়নবের কথিত প্রেমিক আসাদুলকে আটক করে।
জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় বুধবার নিহতের বড় ভাই আবুল হোসেন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার হওয়া দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।