রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বললেন তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা
সুইডেন, জাপান ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ রোববার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালট্রম এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেদেরিকো মঘেরিনি উখিয়ার কুতুপালং এবং বালুখারী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। আসন্ন আসেম সম্মেলনে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তাঁরা রোহিঙ্গা সংকট জোরালোভাবে তুলে ধরবেন বলেও জানান।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল বলেন, অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা তাদের দেশ থেকে পালিয়ে আসার যে বিবরণ দিয়েছে তা অত্যন্ত করুণ। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই স্বদেশে ফেরত যেতে হবে। এই ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ফোরামে জোরালোভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেদেরিকো মঘেরিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের যে বিবরণ এখানে শুনেছি তা ভয়াবহ। নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এখানে এই অবস্থায় তারা বেশি দিন থাকতে পারে না। তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে নিতে হবে।’ তিনি বলেন, এত বিপুল রোহিঙ্গাকে স্থান দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার জাপান, জার্মানি ও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তাঁরা আসেম (এশিয়া-ইউরোপ মিটিং) সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ইস্যু জোরালোভাবে তুলে ধরবেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, মিয়ানমার অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে বিদেশি তিনজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি কক্সবাজারের উদ্দেশে তেজগাঁও বিমান ঘাঁটি ত্যাগ করে। বিদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কক্সবাজারে পৌঁছে উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালংসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
একইসঙ্গে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেলে অতিথিদের নিয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফেরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।