বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের জন্য সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি কারিগরি প্রকল্প প্রস্তাব (টিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। এজন্য ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্পও নিয়েছে সরকার।
প্রকল্পটির জন্য মাদারীপুর শিবচরের চর জানাজাত, ঢাকার দোহারের চর বিলাসপুর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেয়াইন ও লতব্দি এলাকাকে বিবেচনা করা হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, দুটি ধাপে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে চারটি জায়গা হতে যেকোনো একটি জায়গা নির্বাচন করা হবে এবং দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচিত স্থানের বিস্তারিত সমীক্ষা (ডিএফএস) সম্পাদিত হবে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চারটি স্থানকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। চারটি স্থানের মধ্যে যেকোনো একটি স্থানকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্পটিকে অত্যধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
প্রকল্প প্রস্তাবনা বিবেচনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ববোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের সহকারী প্রধান মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত কার্যপত্রে প্রকল্পের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের বর্ধিত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে একটি আধুনিক বিমানবন্দর নির্মাণ করা একান্ত জরুরি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন হিসেবে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতকরণের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক মানের নতুন একটি বিমানবন্দর নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
চারটি স্থান নির্বাচনের বিষয়ে কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নিমিত্ত বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় হতে ঢাকার সাথে উত্তম যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনপূর্বক স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের লক্ষে মোট ৯টি স্থান সরেজমিনে পরিদশন করে ঢাকা থেকে দূরত্ব, ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, জমির পর্যাপ্ততা, আন্তর্জাতিক রুট, সড়ক, রেল ও নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা, পুনর্বাসন, যাতায়াত খরচ ইত্যাদি বিবেচনা করে উপরোক্ত চারটি স্থান নির্বাচন করা হয়।’
পরিকল্পনা কমিশন আন্তর্জাতিক এ বিমানবন্দর নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করার জন্য বৈদেশিক সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
আর অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ফার্ম নিয়োগ, এর জনবল ও প্রকল্পের আওতায় ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ে যথাযথভাবে সরকারি ক্রয় আইন ও বিধিমালা অনুসরণ করা জরুরি।
এ বিষয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অনেক বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নির্মাণ খুবই জরুরি। প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি হবে সত্যিকার অর্থেই আন্তর্জাতিক মানের। এটি যাতে আকর্ষণীয় হয় এবং বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেভাবেই এটি নির্মাণ করা হবে।