সকালে ‘দেওয়া হয়েছে’, দুপুরে ‘দেওয়া হয়নি’
ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের জেনারেল রেকর্ডিং অফিসার (জিআরও) আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানান, রমনা থানার নাশকতার একটি মামলায় বিএনপির ৩১ নেতা-কর্মীকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর প্রায় চার ঘণ্টা পর দুপুর আড়াইটার দিকে জানানো হয়, অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
এ নিয়ে আদালতপাড়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিএনপির নেতাদের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন মেজবা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম আমিনুল হক পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করে তাঁদের অব্যাহতি দেন। কিন্তু পরে দুপুরে আদালত অব্যাহতির আদেশ পরিবর্তন করে নতুন করে আদেশ দেওয়ার জন্য ৯ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।’
মেজবা বলেন, ‘এভাবে আদালতের আদেশ পরিবর্তন স্বাভাবিক নয়। সরকারের চাপে মূলত এটি পরিবর্তন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আদালতের বিচারক কোনো আদেশ দিলে তা পরিবর্তন করতে পারেন না। কারণ প্রবাদ আছে, হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না। কিন্তু এখানে তার পুরো উল্টো ঘটেছে।’
বিএনপির নেতাদের এই আইনজীবী জানান, এসব মামলায় আদালতে কোনো পক্ষের শুনানি হয় না। শুধু বিচারক পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রটি আমলে নিলে আসামিরা আইনগতভাবে অব্যাহতি পেয়ে যান।
সকালে আদালতের জিআরও মাহমুদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, রমনা থানার ২২ (১) ১৫ নং মামলায় পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্র মহানগর হাকিম আমিনুল হক গ্রহণ করে ৩১ জন আসামিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
দুপুরে যোগাযোগ করা হলে জিআরও এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি। তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বার বার ফোন কেটে দেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সফু ও ছাত্রদল নেতা মৃত নুরুজ্জামান জনিসহ ৩১ জন।
গত ১৭ জানুয়ারি রাজধানীর সেগুনবাগিচা শিল্পকলা একাডেমির সামনে ২০ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-২০ জন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) শফিউল ইসলাম মামলাটি করেন।
পরে ১৯ মে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ৩১ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেলসহ সাত জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।