দুদিনের বৃষ্টিতেই প্রায় ১৫ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
দুই দিনের টানা বর্ষণে পাবনার নয়টি উপজেলার অন্তত চার হাজার হেক্টর জমির আমন ধান তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার।
আজ সোমবার জেলা কৃষি সম্প্রাসরণ বিভাগ এসব তথ্য জানিয়েছে।
এ ছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে সাঁথিয়া উপজেলার শালঘর এলাকায় নজরুল ইসলাম নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরে জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় তিন লাখ হেক্টর জমিতে রোপা আমন, বোনা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ও শাকসবজির চাষ করা হয়। গত শুক্র ও শনিবারের টানা বর্ষণে জেলার নয়টি উপজেলায় ওই সব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং সাঁথিয়ায় এক ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ডুবে যায় শতাধিক কাঁচা-পাকা রাস্তা। মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে পচা নর্দমাযুক্ত পানি। ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, টানা বৃষ্টিতে জেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির ধান ও ৬৬০ হেক্টর জমির আগাম সবজির ক্ষতি হয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলার হুইখালী গ্রামের কৃষক খোকন মীর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, দুদিনের বৃষ্টিতে যত ক্ষতি হয়েছে। গত বন্যায়ও এত ক্ষতি হয়নি। বৃষ্টির কারণে তাঁদের রোপণ করা প্রায় সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত পরিমাণের অর্ধেকও ঘরে উঠবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সরেজমিন বিভিন্ন ফসলে মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ধান আধা পাকা আর কিছু ধান কাঁচা রয়েছে। আধা পাকা ধান গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। আবার অনেকের পাকা ধানের শিষ পানিতে ভাসছে।
সাঁথিয়া উপজেলার নওয়ানী গ্রামের কৃষক রজব আলী বলেন, প্রায় ১০ বিঘা ধান আবাদ করেছেন তিনি। তবে অতিবৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ ধানের গাছ শুয়ে পড়েছে। এসব গাছের ধান চিটা হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুজানগরের কৃষক মনসুর আলীও জানালেন প্রায় একই কথা। তাঁর রোপণ করা পাঁচ বিঘা জমির ধানের মধ্যে অর্ধেক পানিতে ডুবে আছে। আর অর্ধেক গাছ শুয়ে পড়েছে মাটিতে। ডুবে গেছে আগাম সবজির ক্ষেতও।
তবে শিগগিরই পর্যাপ্ত রোদ পেলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমবে বলে জানালেন সাঁথিয়া উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাহার হোসেন। এরই মধ্যে রোদ পেয়ে কিছু ধান গাছ দাঁড়িয়েও গেছে বলে জানান তিনি।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভূতি ভূষণ বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধানসহ চার হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল ও শাক সবজির ক্ষতি হয়েছে। এর বাজার মূল্য আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার মতো হতে পারে।