হাত-পা বেঁধে স্ত্রীর শরীরে আগুন দিল স্বামী!
স্বামী সাজ্জাদ হোসেন প্রায়ই মারধর করত রোজিনা আক্তারকে (২০)। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দুই মাস বাবার বাড়িতে ছিল রোজিনা। গত রোববারই রোজিনাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে সাজ্জাদ।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ঘুমন্ত রোজিনার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সাজ্জাদ। আগুন ধরানোর আগে রোজিনার হাত ও পা বেঁধে রাখে সাজ্জাদ!
রোজিনা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন রোজিনার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কুমিল্লার সদর থানার দুর্গাপুর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে থাকতেন দগ্ধ রোজিনা। ওই দম্পতির ১০ মাসের একটি শিশু আছে। ওর নাম নুসরাত।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা গ্রামের আবদুস সামাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট রোজিনা।
রোজিনা বড় ভাই শামীম হোসেন জানান, পারিবারিকভাবে গত আড়াই বছর আগে রোজিনার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে পারিবারিক নানা কারণে রোজিনাকে মারধর করত সাজ্জাদ।
শামীম জানান, সাজ্জাদ প্রায়ই রোজিনার কাছ থেকে টাকা পয়সা দাবি করত। বিশেষ করে রোজিনার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার কথা বলত। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে রোজিনা তাঁর শিশু সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। গত দুই মাস বাবার বাড়িতে অবস্থান শেষে গত রোববারই স্বামী সাজ্জাদ এসে রোজিনাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়।
শামীম আরো জানান, শরীরে আগুন দেওয়ার পর রোজিনার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দ্রুত এসে রোজিনাকে উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করায়। সাজ্জাদ ওই ঘটনার পর থেকে পলাতক।
রোজিনার স্বজনরা একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।
শামীম জানান, অ্যাম্বুলেন্সে করে আসার সময় দগ্ধ রোজিনা নিজেই রাতের এসব ঘটনার কথা জানান।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল জানান, রোজিনার শরীরের ৪৮ শতাংশ পুড়ে গেছে, তাঁর শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহারিয়ার রেজা জানান, দগ্ধ রোজিনার অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রোজিনাকে তাঁর স্বামী ঘুমন্ত অবস্থায় আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি আরো জানান, ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় থানা পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে।