মেয়েসন্তানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই : চুমকি
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, মেয়েসন্তানকে ছেলেসন্তানের চেয়ে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল, ‘আইনের কঠোর প্রয়োগ নয়, জনসচেতনতাই পারে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করতে’।
বৃহস্পতিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাল্যবিবাহরোধে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, এ ক্ষেত্রে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় নজরদারি বাড়ছে। শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমষ্টিগতভাবে সোচ্চার হতে হবে। শিশু অধিকার বিশেষ করে মেয়েশিশুর অধিকার বিষয়ে সরকার, বেসরকারি সংস্থাসহ সবাইকে আইনের প্রয়োগ ও জনসচেতনতার মাধ্যমে একযোগে কাজ করতে হবে।
শিশু নির্যাতনের দু-চারটি ঘটনা ঘটলেও তা প্রতিরোধে সরকার যথেষ্ট কাজ করছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
মেহের আফরোজ চুমকি আরো বলেন, প্রতিটি শিশুর জন্য সচেতন হতে হবে। আবার কেবল মেয়েশিশুকে নয়, ছেলেশিশুকেও সচেতন করতে হবে। দেশে ভালো ভালো আইন আছে, কিন্তু এ বিষয়ে জনসচেতনতা কম। আগে অভিভাবকরা তাঁদের শিশুরা নির্যাতিত হলে তা প্রকাশ করতেন না। কিন্তু সময় বদলেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে শিশু নির্যাতনের হার অনেক কমে আসবে। আর ২০৪১ সালের মধ্যে এটি নির্মূল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনদিনব্যাপী এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি। এতে সার্বিক সহযোগিতা করেছে উইম্যান অ্যান্ড গার্লস লিড গ্লোবাল ও হার চয়েজ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, শিশু নির্যাতন বন্ধে অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরেও নির্যাতনের মাত্রা কমছে না। প্রতিদিনই নির্যাতিত, লাঞ্ছিত শিশুদের সংবাদ শোনা যায়। শিশু অধিকার সুরক্ষার মাধ্যমে সঠিক বিকাশ আজ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি বলেন, ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি, যার অর্ধেকই মেয়েশিশু। এসব মেয়েশিশুর প্রতি নির্যাতন প্রতিরোধে জনসচেতনতা যেমনি দরকার, তেমনি দরকার আইনের কঠোর প্রয়োগ। এখন দরকার সবাই মিলে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মানসিকতা বদলে ফেলে সুন্দর ও স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়া।
প্রতিযোগিতায় ওয়াইডব্লিউসিএ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজকে পরাজিত করে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু রইস, সাংবাদিক মাইনুল আলম, সেলিনা তাওহিদ, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।