দুর্নীতির কারণে মানুষ বিড়ম্বনায় পড়ছে : রাষ্ট্রপতি
সমাজের ক্ষুদ্র একটা অংশের দুর্নীতির কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, দুর্নীতি এই সমাজের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হলে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে।
আজ সোমবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
কলেজের মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দুর্নীতিকে ঘৃণা করাসহ এর বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নসহ সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণ করতে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ এখন শিক্ষার্থীরাই একবিংশ শতাব্দীর প্রতিনিধিত্ব করছে। এ কারণে তাদের পুরাতন ধ্যান-ধারণা বাদ দিয়ে নতুন চিন্তা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে ও নেতৃত্ব দিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আরো বলেন, উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থাকবে, মতাদর্শের পার্থক্য থাকবে, এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তবে দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও সবাইকে দেশের উন্নয়নে একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।
যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাব। আমার চাওয়ার আর কিছু নেই। দেশের সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছি। আমি এখন আর রাজনীতি করি না, আমার রাজনীতি করা যাবে না। আপনাদের সঙ্গে মিলেমিশে বাকি জীবন পার করতে চাই। সুখী সমৃদ্ধশালী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই।’
বাজিতপুর কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিক, বাজিতপুর-নিকলী আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান।
এর আগে দুপুর ১টায় রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বাজিতপুর হেলিপ্যাডে নামে। পরে উপজেলা ডাকবাংলোয় রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে রাষ্ট্রপতি বাজিতপুরে স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযোদ্ধা চত্বর ও চারটি সেতুর উদ্বোধন করেন।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শেষে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে পৌঁছান। সেখানে কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর শহরের খড়মপট্টি এলাকায় নিজ বাসভবনে তিনি রাতযাপন করবেন। আগামীকাল মঙ্গলবার কটিয়াদী উপজেলায় রাষ্ট্রপতির আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।