প্রধান বিচারপতি গৃহবন্দি : মওদুদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে মওদুদ এই মন্তব্য করেন।
‘নগ্ন দলীয়করণে বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থা’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট। এতে দেওয়া বক্তব্যে মওদুদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সমালোচনা করে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ছুটির আবেদন করেন যে চিঠিতে, তা আজ ফেসবুকেসহ প্রায় সবার কাছে আছে।’
চিঠির একটা প্রিন্ট কপি দেখিয়ে মওদুদ বলেন, ‘যে চিঠিতে পাঁচটি বানান ভুল, সে চিঠি প্রধান বিচারপতির চিঠি, এটা অসম্ভব। একটা ভুয়া চিঠি, নিচে তাঁর সই। এটা তাঁর সই নয়। তার নিচে সই যেটা যে কোনোভাবে করা হয়েছে, এটা একটা লজ্জার ব্যাপার। রাষ্ট্রের এই পর্যায় থেকে ভুয়া তথ্য দেওয়া হয়, এতটা জালিয়াতি! প্রধান বিচারপতির সাথে কেউ দেখা করতে পারেন না। আজকে তিনি গৃহবন্দি।’
সেমিনারে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সরকার ক্ষমাহীন গুণ্ডামি করছে। বন্দুকের নল দিয়ে এসব করা হচ্ছে। তিনি ছুটি নেননি, বলা হচ্ছে তিনি ছুটি নিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, প্রধান বিচারপতি কোথায় আছেন, তার খবর তিনি জানেন না। তাহলে কি প্রধান বিচারপতি গুম হয়ে গেল?’
‘গুমের যে কালচার (সংস্কৃতি) প্রধান বিচারপতিও যে গুম হননি, তা বুঝব কীভাবে? সরকারের লোকেরা আবার বলছেন যে, একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ থেকে এটাই মনে হয় যে, ষড়যন্ত্র মনে করেই তাঁকে সরিয়ে দিচ্ছেন।’
সেমিনারে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাথে আমার তর্ক হয়েছিল। তিনি (এস কে সিনহা) আমাকে বলেছিলেন, ইনহ্যারেন্ট পাওয়ার প্রয়োগ করে আমরা তোমাকে (মাহমুদুর রহমান) ফাঁসিও দিতে পারি। আজকে শেখ হাসিনা তাঁর ইনহ্যারেন্ট পাওয়ার এস কে সিনহার প্রতি দেখাচ্ছে।’
এর আগে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যতদিন এই সরকার ক্ষমতায় আছে, ততদিন আপনাদের (শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট) দাবি মানবে না।
দেশের প্রধান বিচারপতি কেথায় আছেন? এই রাষ্ট্র জানে? আইনমন্ত্রী জানেন? সিন্দাবাদের দৈত্য চেপে বসেছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন ড. সদরুল আমিন, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।