মালিতে নিহত তিন শান্তিরক্ষীর জানাজা অনুষ্ঠিত
আফ্রিকার মালিতে নিহত তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার ঢাকা সেনানিবাসের ১৩ এমপি ইউনিটের ‘চপার্স ডেনে’ ওই তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর মালিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি সেনা নিহত হন। শান্তিরক্ষীর মরদেহ নিয়ে গতকাল শনিবার তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল জ্যাঁ-পল ডিকোনিন্ক।
আইএসপিআর জানায়, জানাজায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল মশিহুজ্জামান সেরনিয়াবাতসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজা শেষে তিন বাহিনীর প্রধান ও জাতিসংঘের ফোর্স কমান্ডার ডিকোনিন্ক নিহতদের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে শান্তিরক্ষীদের মরদেহ নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি পাঠানো হবে। সেখানে সামরিক মর্যাদায় তাঁদের দাফন করা হবে।
এর আগে জাতিসংঘের ফোর্স কমান্ডার সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অব অনার দেয়। সব শেষে তিনি সেনা সদর দপ্তরে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
নিহত শান্তিরক্ষীদের নাম হলো সার্জেন্ট আলতাফ, ইএমই (দিনাজপুর), ল্যান্স করপোরাল জাকিরুল, আর্টিলারি (নেত্রকোনা), সৈনিক মনোয়ার, ইস্ট বেঙ্গল (বরিশাল)।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর মালির রাজধানী বামাকোতে শহীদ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ কর্তৃক সম্মান প্রদর্শন করা হয়। পরে সেনাসদস্যদের মরদেহ গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। মালিতে নিয়োজিত জাতিসংঘের ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল জ্যাঁ-পল ডিকোনিন্ক বীর শান্তিরক্ষীদের সম্মান জানাতে নিজেই মরদেহের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছেন।
মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মিশন হিসেবে বিবেচিত। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই মিশনে এরই মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীসহ বিভিন্ন দেশের সর্বমোট ১৩৩ জন শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছে। বাংলাদেশের দুঃসাহসী শান্তিরক্ষীরা সর্বদা দেশের সম্মানের বিষয়টি মাথায় রেখে ঝুঁকিপূর্ণ এই মিশনে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন।