পোশাক কারখানা পরিবেশবান্ধব হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে গ্রিন ফ্যাক্টরিতে (পরিবেশবান্ধব কারখানা) রূপান্তর করা হচ্ছে। বেশ কিছু কারখানা এরই মধ্যে গ্রিন ফ্যাক্টরিতে রূপান্তর করা হয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকায় হোটেল রেডিসন ব্লুতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স করপোরেশন (আইএফসি) আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস সাসটেইনেবল টেক্সটাইল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ বকশীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, গ্রিন ফ্যাক্টরি নির্মাণের জন্য সরকার ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ট্যাক্স ৩৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ১০ ভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে মোট ২০৮টি তৈরি পোশাক কারখানাকে পর্যায়ক্রমে গ্রিন ফ্যাক্টরি করা হচ্ছে। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করা হয়েছে। নিরাপদ বিল্ডিং ও ফায়ার সেফটি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো নিরাপদ ও কর্মবান্ধব করা হয়েছে। দেশে একের পর এক গ্রিন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতারা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে না। তৈরি পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ক্রেতাদের এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। শ্রমিকদের নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা ও উপযুক্ত বেতন নিশ্চিত করা হয়েছে।
তোফায়েল বলেন, বাংলাদেশ গত অর্থবছর প্রায় ৩৫ বিলিয়ন (৩৫০০ কোটি) মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য এবং তিন বিলিয়ন (৩০০ কোটি) মার্কিন ডলার মূল্যের সেবা রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে প্রায় ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এ শিল্পে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছে, এর ৮০ ভাগই নারী। কারখানার শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও উপযুক্ত বেতন-ভাতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পকে স্থায়ী ও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স করপোরেশন পার্টনারশিপ ফর ক্লিনার টেক্সটাইলের (প্যাক্টে) মাধ্যমে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। প্রথম দফায় দেশের দুই শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানায় প্রতি বছর ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন লিটার পানি এবং ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাঁচাতে সহায়তা করেছে। দ্বিতীয় পর্বে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সহায়তায় স্পিনিং থেকে শুরু করে উৎপাদনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত টেক্সটাইল ভ্যালু চেইনের সঙ্গে কাজ করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সব ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, সে সময় মিয়ানমার থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি। বাংলাদেশ আশা করছে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নেবে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি মানুষকে ভারত আশ্রয় দিয়েছিল। বাংলাদেশ একান্ত মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্তকে বিশ্ববাসী প্রশংসা করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স করপোরেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েন্ডি ওয়েরনারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং আইএফসির উচ্চপদস্থ র্কমকর্তারা। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ে সহায়তার জন্য পার্টনারশিপ ফর ক্লিনার টেক্সটাইল (প্যাক্টে) এবং বিজিএমইএর মধ্যে একটি সমঝোতা সই হয়।